× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

তথ্য সুরক্ষা দিবস: প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীর নিরাপত্তার অঙ্গীকার

২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৮ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

বর্তমান বিশ্ব ডিজিটাল প্রযুক্তির ওপর এতটাই নির্ভরশীল যে তথ্য এখন নতুন প্রজন্মের 'তেল' বা সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। প্রতিদিন আমাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত কাজের সাথে বিপুল পরিমাণ তথ্য আদান-প্রদান হয়। তবে এর সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে সাইবার অপরাধ, ডেটা চুরি এবং অনৈতিক ব্যবহারের ঝুঁকি। এই প্রেক্ষাপটে তথ্য সুরক্ষা দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি কেবল একটি দিন নয়, বরং তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি একটি নৈতিক অঙ্গীকারের দিন।

প্রতি বছর ২৮ জানুয়ারি উদযাপিত হয় তথ্য সুরক্ষা দিবস (Data Protection Day) ১৯৮১ সালের এই দিনে ইউরোপীয় কাউন্সিল প্রথমবারের মতো একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা ছিল বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক ডেটা সুরক্ষা চুক্তি। এ চুক্তি ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। পরবর্তীতে ২০০৬ সাল থেকে এই দিনটি বিশ্বব্যাপী তথ্য সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরার উদ্দেশ্যে উদযাপিত হয়ে আসছে।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের বিস্তারের ফলে তথ্য এখন একটি বিশাল সম্পদে পরিণত হয়েছে। ব্যক্তি থেকে শুরু করে সরকার এবং প্রতিষ্ঠান-সবাই তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের অনলাইন কার্যকলাপ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার, ব্যাংকিং এবং কেনাকাটা-সবকিছুই আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের সাথে যুক্ত। তবে এই তথ্যের ভুল ব্যবহার বা হ্যাকিংয়ের ফলে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, আর্থিক ক্ষতি, এমনকি সামাজিক সঙ্কটের সৃষ্টি হতে পারে। তথ্য সুরক্ষা দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, তথ্য শুধুমাত্র একটি সম্পদ নয়, এটি সংবেদনশীল ও মূল্যবান যা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।

প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী অসংখ্য বড় কোম্পানি ডেটা ব্রিচের শিকার হয়। এর ফলে কোটি কোটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, বিগত কয়েক বছরে ফেসবুক, টুইটার, এবং বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের ডেটাবেজ থেকে ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি হয়েছে। অনলাইন প্রতারণার অন্যতম জনপ্রিয় পদ্ধতি ফিশিং।

এতে ভুয়া ইমেল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন পাসওয়ার্ড বা ব্যাংকিং তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ক্ষতিকারক সফটওয়্যার ইনস্টল করা হয়, যা তথ্য চুরি বা লক করার মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবি করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে গিয়ে অনেকেই ব্যক্তিগত তথ্য পাবলিক করে দেন, যা সাইবার অপরাধীদের কাছে সহজলভ্য হয়ে ওঠে। তাছাড়া, তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ্লিকেশন অনেক সময় এই তথ্য সংগ্রহ করে।

অনেক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষার পরিবর্তে তা লাভের উদ্দেশ্যে বিক্রি করে দেয়। তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা এবং জটিল পাসওয়ার্ড তৈরি করা। সন্দেহজনক ইমেল বা লিংক থেকে দূরে থাকতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ ডেটার একটি কপি নিরাপদ স্থানে রাখা।

প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সমস্ত ডেটা এনক্রিপ্ট করে সংরক্ষণ করা উচিত, যাতে এটি হ্যাক হলেও ডিকোড করা কঠিন হয়। তথ্য সুরক্ষা সম্পর্কে কর্মচারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। কোম্পানিগুলোর উচিত গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষার জন্য কঠোর নীতিমালা অনুসরণ করা।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতিটি দেশের উচিত ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য কঠোর আইন তৈরি করা। সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে শক্তিশালী শাস্তির ব্যবস্থা করা।

তথ্য সুরক্ষা কেবল প্রযুক্তিবিদদের কাজ নয়; এটি আমাদের সবার দায়িত্ব। আমরা যদি নিজেরাই সচেতন না হই, তাহলে তথ্যের অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব নয়। প্রযুক্তি আমাদের জন্য আশীর্বাদ হতে পারে, যদি আমরা এর সঠিক ব্যবহার ও সুরক্ষার গুরুত্ব বুঝি। তথ্য সুরক্ষায় সচেতনতা তৈরি এবং একযোগে কাজ করলেই আমরা একটি নিরাপদ

ও সুরক্ষিত ডিজিটাল সমাজ গড়ে তুলতে পারি। তথ্য সুরক্ষায় সচেতন থাকুন, নিজেকে এবং আপনার তথ্যকে সুরক্ষিত রাখুন।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.