× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বাউ বিফস্টেক টমেটো: কম বীজ, বেশি পুষ্টি ও স্বাদে অনন্য

সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, বাকৃবি প্রতিনিধি।

০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:১৫ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

প্রতি বছর শীতকালে বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের টমেটো চাষ করা হলেও সব জাত সমান মানসম্পন্ন নয়। তবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষকরা সম্প্রতি ‘বাউ বিফস্টেক টমেটো-১’ নামে নতুন একটি উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছেন। এই টমেটো শুধু আকৃতিতে বড় নয়, স্বাদেও পুষ্টিগুণে অনন্য।

বাউ বিফস্টেক টমেটো-১ উদ্ভাবনের গবেষণা পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান। গবেষণা কাজটি ২০১৯ সাল থেকে শুরু হয় এবং সংকরায়ন ও বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতটি উদ্ভাবন করা হয়। চার বছর জাতটি নিয়ে কাজ করার পর ২০২২ সালে অধিকতর কৌলিতাত্তি্বক গবেষণার জন্য কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ.বি.এম. আরিফ হাসান খান রবিন ও অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান গবেষণার তত্ত্বাবধান করেন। এছাড়া, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মেশকুল জান্নাত তাজ তার স্নাতকোত্তর গবেষণার অংশ হিসেবে এই জাতটি নিয়ে দীর্ঘ তিন বছর কাজ করেন।

অধ্যাপক ড. আরিফ হাসান খান রবিন বলেন, ‘বাউ বিফস্টেক টমেটো খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং মিষ্টতা যুক্ত। সাধারণ টমেটোর তুলনায় এর আকৃতি অনেক বড় এবং গঠনেও পার্থক্য রয়েছে। সাধারণত টমেটোর দুটি কোষ থাকে। কিন্তু এই বিশেষ জাতের টমেটোতে অনেকগুলো কোষ রয়েছে, যা একে অনন্য করে তুলেছে। কোষবিন্যাস দেখতে অনেকটা গরুর মাংসের মতো হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে ‘বাউ বিফস্টেক’। আকারে এটি অন্যান্য টমেটোর প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিটি ফলের ওজন গড়ে ৩০০-৬০০ গ্রাম হয়। যা সাধারণ টমেটোর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। বার্গার তৈরিতে এটি অত্যন্ত উপযোগী। কারণ এক টমেটোর মাত্র একটি স্লাইস‌'ই পুরো বার্গারের জন্য যথেষ্ট।

ফলন সম্পর্কে অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান বলেন, ‘বাউ বিফস্টেক টমেটো-১ গাছের উচ্চতা ৯০ থেকে ১২০ সেমি এবং এটি তুলনামূলকভাবে কম থোকা ধরে। তবে, প্রতিটি ফল আকারে বড় হওয়ায় গড়ে ৩-৪টি টমেটোতেই ১ কেজি ওজন হয়ে যায়। একটি গাছে সাধারণত ১৫ থেকে ২০টি টমেটো ধরে। ফলে প্রতি গাছ থেকে গড়ে ৫-৬ কেজি টমেটো উৎপাদিত হয়, যা সাধারণ টমেটো গাছের তুলনায় বেশি। জাতটি হেক্টরপ্রতি ৪০-৫০ টন ফলন দিতে সক্ষম এবং ৯০-১০০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ করা যায়।

পুষ্টিগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই টমেটোতে উচ্চ পরিমাণে গ্লুকোজ (১.২%), ফ্রুকটোজ (৩.৭%) ও সুক্রোজ (৩.৬%) থাকায় এটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং স্বাদেও মিষ্টতা যুক্ত। এসব বৈশিষ্ট্য এই টমেটোকে ভোক্তাদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

এই জাতটির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান বলেন, বাউ বিফস্টেক টমেটো-১ কম বীজযুক্ত, মাংসল ও উজ্জ্বল লাল রংয়ের হয়ে থাকে। এটি কোনো ধরণের সংরক্ষণ উপায় ছাড়াই সাধারণ তাপমাত্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন সংরক্ষণ করা যায়। পোকা মাকড় ও রোগ বালাই হয় না বলেলেই চলে। ফলে ক্ষতিকর কীটনাশকের তেমন কোন প্রয়োজন হয় না বলে উৎপাদন খরচ কম হয়। উৎপাদন কৌশল অন্যান্য জাতের তুলনায় অধিকতর পরিবেশ বান্ধব। এছাড়া, এর পুষ্টি উপাদানের কার্যকর ব্যবহার অত্যন্ত ভালো। এই জাতটি বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটির জন্য বেশ উপযোগী এবং এটি স্থানীয় কৃষি ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.