ঢাকার ব্যস্ত শহর থেকে অনেকটা দূরে, কুমিল্লার ছোট্ট এক শহরতলি মোহাম্মদপুরে বেড়ে উঠা ওয়াদুদ ভাইয়ের। চেহারায় সাদামাটা, কথাবার্তায় বিনয়ী—তবুও তার চোখে যেন এক অদ্ভুত দীপ্তি। এই দীপ্তির উৎস শুধুই ভালোবাসা আর সেবার ইচ্ছা।
দুই যুগ আগে, নিজের চোখের চিকিৎসার জন্য একবার ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। সেখানেই প্রথম দেখেছিলেন একজন বৃদ্ধা, যার চোখে ছানি পড়েছিল, কিন্তু অর্থের অভাবে অপারেশন করাতে পারছিলেন না। সেই মুহূর্তটা বদলে দিয়েছিল ওয়াদুদ ভাইয়ের জীবনের দিশা। নিজের চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি খুঁজতে শুরু করলেন—এই অসহায় মানুষদের জন্য কিছু করা যায় কিনা।
আজ ২০ বছর পেরিয়ে গেছে। শহরে বড় ব্যবসা গড়ে তোলার অগাধ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও, তিনি বেছে নিয়েছেন সম্পূর্ণ আলাদা পথ। বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন করিয়ে দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষকে। শুধু আজকের দিনেই ৩০ জন মানুষের চোখে নতুন আলো ফিরিয়ে দিয়েছেন।
লোকেরা বলেন, "এই মানুষটা পাগল না হলে কী!"
ওয়াদুদ ভাই বলেন না কিছু শুধু হেসে বলেন, “মানুষের চোখে যখন আলো জ্বলে, আমার মনটাও আলোকিত হয়ে ওঠে।” যারা নতুন করে চোখে দেখতে পেরেছেন, যারা আবার তাদের সন্তানদের মুখ দেখতে পেয়েছেন—তারা বলেন, "এই মানুষটা সাদা মনের মানুষ!"
ওয়াদুদ ভাই কখনো সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন না, পুরস্কার বা স্বীকৃতি চান না। তিনি বলেন, “মানুষের চোখে আলো ফেরা মানেই আমার জীবনের সার্থকতা।”
তার হাত ধরে আলো ফিরে এসেছে হাজারো চোখে, আর সেই আলোয় জ্বলছে মানবতার এক অনন্য প্রদীপ।