জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম–এর সাহিত্যকীর্তি ও জুলাই অভ্যুত্থানে তার বিদ্রোহী চেতনার প্রভাব নিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। "জুলাই অভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার" শীর্ষক আলোচনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বুদ্ধিজীবীদের অংশগ্রহণে এ অনুষ্ঠানে নজরুলের জীবন, দর্শন ও সাহিত্য নিয়ে গভীর আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী। আলোচনায় অংশ নেন এনএসইউ’র ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আব্দুল হাই সিকদার, এবং এনএসইউ’র ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে জাতীয় কবির বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করেন নজরুল ইনস্টিটিউটের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী নাসিম আহমেদ।
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন এক বিদ্রোহী কণ্ঠস্বর, যিনি গোঁড়ামির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। একাধারে ধর্মীয় সম্প্রীতি, ন্যায় ও শান্তির পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি এক অদম্য মানবিক চেতনার প্রতীক।”
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, “নজরুলের লেখা শত বছর আগে হলেও আজও সমান প্রাসঙ্গিক। মাত্র দুই যুগের কম সময়ে তিনি যে সাহিত্য ভান্ডার রেখে গেছেন, তা বিস্ময়কর। নজরুলকে তিনটি শব্দে বর্ণনা করতে হলে বলব— মানবতা, স্বাধীনতা ও সম্মান।”
কবি আব্দুল হাই সিকদার তাঁর বক্তব্য শুরুতেই জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, “বার্নার্ড শ, রবার্ট ফ্রস্ট বা ভার্জিনিয়া উলফের মতো সমসাময়িকদের মাঝে নজরুল একাধিক ক্ষেত্রে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর রচনায় ভাবনা ও আবেগ, বিজ্ঞান ও বিশ্বাস, আধুনিকতা ও ঐতিহ্য সবকিছু মিলেমিশে এক অনন্য সুর সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “নজরুল না থাকলে জুলাই আন্দোলনের ভাষা আমরা পেতাম না। তাঁর কবিতা ও গান আমাদের সংগ্রামের ভাষা।”
এনএসইউ উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল হান্নান চৌধুরী বলেন, “জুলাই বিপ্লবে প্রাণ হারানো সব শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য আমাদের তরুণদের অনুপ্রাণিত করেছে, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে।”
অনুষ্ঠানের শেষ অংশে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন, যা উপস্থিত দর্শকদের আবেগ ছুঁয়ে যায়।