নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) আজ, ১৭ জুলাই ২০২৫ (বুধবার) “জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে” শীর্ষক একটি স্মরণসভা আয়োজন করা হয়। অডি ৮০১-এ আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলোচনার মাধ্যমে শহীদদের স্মরণ ও জুলাই অভ্যুত্থানের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়।
পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়, এরপর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। পরে একটি সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে জুলাইয়ের শহীদদের স্মৃতি তুলে ধরা হয়।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আবদুর রব খান স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, “জুলাই বিদ্রোহ কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়, এটি নিপীড়নের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধের প্রতীক। আজকের এই আলোচনা আমাদের সেই চেতনার সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করবে এবং জাতীয় ইতিহাস নিয়ে গভীর ভাবনার পরিবেশ সৃষ্টি করবে।”
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, “আমাদের এমন সংস্কার দরকার, যেখানে আমরা অবাধে আমাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারি। তারা যদি আমাদের সঙ্গে বেঈমানি করা শুরু করে, তাহলে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতাও আমাদের থাকা উচিত। জুলাইয়ে শহীদরা প্রাণ দিয়েছিলেন শুধুমাত্র দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের জন্য নয়। আমাদেরকে অবশ্যই তাদের আত্মত্যাগের মূল্য দেওয়া উচিত।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতিষ্ঠাকালীন আজীবন সদস্য জনাব বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, “আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বুঝতে হবে, আমরা আবারও যে স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করছি, তা সহজে অর্জিত হয়নি। ইতিহাসকে স্মরণে রাখার মধ্য দিয়েই ভবিষ্যৎ পথচলা সঠিকভাবে নির্ধারিত হবে।”
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন প্রতিষ্ঠাকালীন আজীবন সদস্য জনাব এম. এ. কাশেম। তিনি বলেন, “জুলাই বিদ্রোহের মতো ঘটনাগুলো আমাদের বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়, কী সাহস ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমাদের জাতি গঠিত হয়েছে। আমরা যেন এসব ঘটনা সংরক্ষণ করি, অধ্যয়ন করি এবং গর্বের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরি।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সবসময় সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিক গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জুলাই অভ্যুত্থানকে স্মরণ করা মানে শুধু অতীতকে সম্মান জানানো নয়, বরং তার শিক্ষা গ্রহণ করে আগামী প্রজন্মকে ন্যায়, সাহস ও আত্মত্যাগের মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত করা।”
অনুষ্ঠান শেষে জুলাই বিদ্রোহের শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।