সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংক ‘সমসাময়িক ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক অ্যান্টি-মানিলন্ডারিং (এএমএল) কনফারেন্সের আয়োজন করে। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল, ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মাঝে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধবিষয়ক দক্ষতা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
নিয়মিত সচেতনতামূলক কর্মসূচি আয়োজনেরমাধ্যমে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অ্যান্টি-মানিলন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ-সম্পর্কিত চলমান ট্রেন্ড, আইন, বেস্ট-প্র্যাকটিস এবং সর্বোপরি তাঁদের সক্ষমতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে এই কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়েছে।
কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলাম।
১৯ জুলাই ২০২৫ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান এবংডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড ক্যামলকো চৌধুরী মঈনুল ইসলামসহ ব্যাংকটির প্রায়১৮০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
কনফারেন্সে বিএফআইইউ-এর অ্যাডিশনাল ডিরেক্টরসাদরিল আহমেদ ‘কারেন্ট ট্রেন্ডস অব ফ্রড ফর্জারিস ইনক্লুডিং অনলাইন গ্যাম্বলিং, বেটিং, গেমিং, ট্রেডিং অব ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যান্ড এফএক্স’বিষয়ে সেশন পরিচালনা করেন।
এছাড়াও,বিএফআইইউ-এর জয়েন্ট ডিরেক্টর মো. মোশাররফ হোসেন ‘রিস্ক অ্যান্ড ইমপ্যাক্ট অব ট্রেড বেজড অ্যান্ড ক্রেডিট ব্যাকড মানিলন্ডারিং, টাইপোলজিস অ্যান্ড ট্রেন্ডস’ এবং ‘এএমএল অ্যান্ড সিএফটি সিস্টেম চেক ইন্সপেকশন অ্যান্ড রেটিং’ বিষয়ে দুটি সেশন পরিচালনা করেন।
কনফারেন্সে বিএফআইইউ-এর প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলাম বলেন, “অপরাধীরা যাতে ব্যাংকিং চ্যানেলের অপব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যাংকারদের সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।এএমএলও সিএফটি বিষয়েবিএফআইইউ-এর প্রবর্তিত কমপ্লায়েন্সসহদেশি-বিদেশিসকল বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। সঠিকভাবে কেওয়াইসিসম্পন্ন করা, নিয়মিতভ গ্রাহকের ট্রানজ্যাকশন মনিটরিং এবং সময়মতো রেগুলেটরি রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে আমরা মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে সক্ষম হবো।”
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে ব্যাংকের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, “এএমএলকমপ্লায়েন্স কেবল একটি রেগুলেটরি বিষয়ই নয়, বরংএটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের ব্যাংকের প্রতি গ্রাহক, রেগুলেটর এবং সমাজের আস্থা ও বিশ্বস্ততার মূল ভিত্তি। প্রতিদিন আমরাঅসংখ্য লেনদেন পরিচালনা করি। সর্বোচ্চ সততা ও শুদ্ধাচার বজায় রেখে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদেরসেবা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এএমএল বিষয়ে নিজেরজ্ঞান সমৃদ্ধ করলে শুধু ব্যাংকই শক্তিশালী হয় না, বরং দেশের পুরো আর্থিক ব্যবস্থাকেও সুরক্ষিত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “দক্ষতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক সপ্তাহব্যাপী এএমএলসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। এমন উদ্যোগের মাধ্যমে আমরাআমাদের ব্যাংকের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এএমএলকমপ্লায়েন্সে উৎকর্ষতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য হলো, এএমএল নিয়ে এমন উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রিতে এমন একটি বেঞ্চমার্ক সেট করা, যাতে এএমএলঅনুশীলনের ব্যাপারে এই ইন্ডাস্ট্রিতে ব্র্যাক ব্যাংক রোল মডেলে রূপান্তরিত হয়।”
কনফারেন্সটিব্যাংকটির কর্মকর্তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে অ্যান্টি-মানিলন্ডারিংয়েরচলমান ট্রেন্ড ও টাইপোলজিস সম্পর্কে জানার সুযোগের পাশাপাশিছিল সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ। একটি মূল্যবোধ-নির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানবসম্পদে বিনিয়োগ করে, যাতে ব্যাংকেরকর্মীরা তাঁদের পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ পান।