× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ধ্বংসস্তূপের নিচে স্বপ্ন: দায় কার?

মাইলস্টোনের কান্না কি শেখাবে নতুন ভোরের পথ?

ড: তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব, দাউদ ইব্রাহিম হাসান এবং আফিফা শহীদ মাম

২৩ জুলাই ২০২৫, ১৫:২২ পিএম

ছবিঃ সংগৃহীত।

গোধূলির আবছা আলোয় সেদিন ২০২৫ সালের সেই উত্তরের আকাশ যেন এক মৃত্যুপুরী হয়ে নেমে এসেছিল। মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের প্রাঙ্গণ মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল এক বিভীষিকাময় ধ্বংসস্তূপে।

বিমানের তীক্ষ্ণ আর্তনাদ, দাউদাউ করে জ্বলে ওঠা আগুন আর বাতাসে পোড়া গন্ধ—এসবই যেন এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের মতো গ্রাস করেছিল পুরো এলাকাকে। এই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা শুধু কিছু প্রাণের বিনিময়ে শেষ হয়নি, বরং আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এক নির্মম বাস্তবতা। এটি শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর আঘাত ছিল না, ছিল আমাদের সমাজের সামগ্রিক দুর্বলতা আর প্রস্তুতির অভাবের এক নগ্ন চিত্র। এই হৃদয়বিদারক ঘটনা আমাদের কি শিক্ষা দিল, তা আজ গভীর সংবেদনশীলতার সাথে অনুধাবন করা প্রয়োজন।

বিমান দুর্ঘটনার ভয়াবহ স্মৃতি মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। তাদের কচি চোখে আজও ভাসছে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠা আগুন আর প্রিয় সহপাঠীদের আর্তনাদ। এই মানসিক ট্রমা কাটিয়ে তাদের আবার স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফিরিয়ে আনা এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। তাদের মন থেকে এই ভয়াবহ স্মৃতি মুছে ফেলার জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী মানসিক সহায়তা ও থেরাপি। এই মর্মান্তিক ঘটনা তাদের মনে যে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে, তা শুধু সময় দিয়ে সারানো সম্ভব নয়, বরং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এর জন্য বিশেষ কাউন্সিলিং ও মনোসামাজিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক, অভিভাবক এবং মনোবিদদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীদের মনে পুনরায় আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তাদের চোখে আর কতদিন ভাসবে, তা বলা কঠিন। তবে নিরন্তর সহায়তা আর ভালোবাসাই পারে তাদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে।

সংবাদ মাধ্যম এবং বাস্তবিকতার মধ্যে যে একটি অমিল রয়েছে, তা লাশ গণনা এবং লাশ লুকানোর বিষয়ে স্পষ্ট হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে ছড়িয়ে পড়েছে নানা ধরনের গুজব, যা জনগণের মধ্যে আরও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। লাশের সংখ্যা নিয়ে সরকারি তথ্যের সাথে স্থানীয়দের অনুমানের ফারাক জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি করেছে। এই সমস্যা সমাধানে প্রশাসনকে আরও স্বচ্ছ ও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। লাশের সঠিক সংখ্যা, তাদের পরিচয় এবং উদ্ধার কার্যক্রমের প্রতিটি ধাপ জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। এই বিষয়ে যেকোনো ধরনের তথ্য গোপন রাখা অথবা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রদান করা শুধু জনমনে অবিশ্বাস তৈরি করবে না, বরং প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থা কমিয়ে দেবে। প্রশাসনকে এই বিষয়ে একটি পরিষ্কার এবং বিশ্বাসযোগ্য চিত্র উপস্থাপন করতে হবে, যাতে কোনো ধরনের গুজবের অবকাশ না থাকে। বিশেষ করে অ্যাটেনডেন্স লিস্টের সাথে লাশের সংখ্যা মিলিয়ে দ্রুত জনগণের সামনে উপস্থাপন করা জরুরি।

বর্তমান এর পাশাপাশি ভবিষ্যতে এই দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে, তা নিয়ে এখন থেকেই ভাবতে হবে। শুধু দুর্ঘটনার পর নয়, বরং পূর্বে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যাবশ্যক। বিমান বাহিনীর নিয়মিত মহড়া এবং প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিমান রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা উচিত। পুরনো বিমানগুলোর দ্রুত পরিবর্তন এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার উপর দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করে জনবহুল এলাকা এড়িয়ে চলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই ধরনের পদক্ষেপগুলো ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।

দুর্যোগ মোকাবেলা এবং আকস্মিক বিপদ মোকাবেলার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কি করণীয় সে বিষয়ে একটি ছোট প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। এই ধরনের প্রশিক্ষণ শুধু বিমান দুর্ঘটনা নয়, বরং যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তাদের সচেতন করবে। ফায়ার ড্রিল, ভূমিকম্পের সময় করণীয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসার মতো বিষয়গুলো সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ এবং অত্যন্ত খারাপ পরিণতি হয় এরকম বিষয়বস্তু সম্পর্কে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী সবাইকে একত্রিত করে সুন্দরভাবে বুঝাতে হবে। তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে, যাতে তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেদের এবং অন্যদের রক্ষা করতে পারে। এটি শুধু শিক্ষার্থীদেরই নয়, শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত যাতে তারা দ্রুত এবং কার্যকরভাবে পদক্ষেপ নিতে পারে।

জাতি গঠনের জন্য সুন্দর একটি নকশা বা রোড ম্যাপ তৈরি করতে হবে, যেখানে কোনো প্রকার হত্যাযজ্ঞের বা কোনো প্রকার দুর্ঘটনার কোনো আশঙ্কা থাকবে না। এই রোডম্যাপে থাকবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রতিটি সেক্টরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। প্রত্যেকটি কোমলমতি শিক্ষার্থীকে সেই প্রতিষ্ঠানে পুনরায় পড়ার ক্ষেত্রে এবং সেই ইনসিডেন্ট ভুলে যেতে যেন সাহায্য করে সেই ব্যবস্থা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে করতে হবে। এটি শুধু একটি স্কুলের সমস্যা নয়, এটি জাতির সামগ্রিক সুস্থতার প্রশ্ন। লাশের যথাযথ তথ্য এবং লাশ গণনার বিষয়টি যেন মিথ্যা না হয়, সেই বিষয়টি জনগণের সামনে প্রশাসনকে প্রমাণ করতে হবে। এর সকল দায়িত্ব শুধু বাংলাদেশ বিমান বাহিনী নয়, বাংলাদেশের বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ এবং জনগণ রয়েছে যারা শিক্ষিত এবং যারা মানুষের উপকারে আসে তাদের এখানে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে হবে।

কোনো সন্তান বাবা-মা পেতে ব্যর্থ না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। যারা এই দুর্ঘটনায় তাদের সন্তানদের হারিয়েছেন, তাদের প্রতি সরকারের বিশেষ সহানুভূতি ও সহায়তা প্রয়োজন। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসা এবং বাইরের চিকিৎসার জন্য সরকার এবং বিমান বাহিনীকেই দায়ভার নিতে হবে যেন একটি কোমলমতি শিশুর প্রাণ অকালে ঝরে না পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি, যে সকল পদক্ষেপ ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনা রোধে আমাদের প্রত্যেককে মানতে হবে সেগুলোর একটি চার্ট বা পদক্ষেপ আমাদের সামনে সুন্দরভাবে খুব সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরতে হবে:
১. নিয়মিত নিরাপত্তা নিরীক্ষা: সকল বিমান ও উড্ডয়ন সরঞ্জাম নিয়মিত ও কঠোরভাবে পরীক্ষা করা।
২. পাইলটদের প্রশিক্ষণ ও মানসিক স্বাস্থ্য: পাইলটদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রাখা।
৩. জনবহুল এলাকার ওপর দিয়ে উড্ডয়ন সীমিতকরণ: জনবহুল এলাকার ওপর দিয়ে অপ্রয়োজনীয় বা ঝুঁকিপূর্ণ উড্ডয়ন বন্ধ করা।
৪. আধুনিক প্রযুক্তি ও জরুরি ব্যবস্থা: বিমানে আধুনিক নিরাপত্তা প্রযুক্তি এবং জরুরি অবতরণের উন্নত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
৫. দুর্যোগ প্রস্তুতি: স্কুল, কলেজসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত দুর্যোগ মোকাবিলার মহড়া আয়োজন করা।
৬. স্বচ্ছ তথ্য সরবরাহ: যেকোনো দুর্ঘটনার পর দ্রুত ও নির্ভুল তথ্য জনগণের সামনে উপস্থাপন করা।
৭. মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা: ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার ব্যবস্থা করা।
৮. আইনি কাঠামো শক্তিশালীকরণ: বিমান চলাচল ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনি কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করা।
৯. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: গণমাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো।
১০. আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ: বিমান চলাচল ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা।
যদি এই সমস্যাগুলোর সমাধান না হয়, তবে এর ভবিষ্যৎ পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা আরও বাড়বে, যা সরকারের প্রতি তাদের বিশ্বাস কমিয়ে দেবে। প্রতিটি সেক্টরের মানুষের জীবনে এর প্রভাব পড়বে। শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে, তাদের স্বাভাবিক পড়াশোনা ব্যাহত হবে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাবে, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। অর্থনৈতিকভাবেও এর প্রভাব পড়বে, কারণ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরাপত্তার অভাব অনুভব করতে পারে। সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে, গুজব ও অপপ্রচারের শিকার হয়ে মানুষ আরও বিভ্রান্ত হবে। এই সমস্যা যদি সমাধান না হয়, তবে তা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে।

এই দুর্বিষহ বাংলাদেশের সংস্কারের দায়িত্ব নিয়েছেন স্কুলের নিজ আগ্রহের দায়িত্বরত শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ আর্মি, এয়ার ফোর্স, ফায়ার সার্ভিস, এবং অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর পরই সাধারণ স্কুল শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছে। তারা নিজেদের মধ্যে তহবিল সংগ্রহ করেছে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য। মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের কিছু শিক্ষার্থী, যারা এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, তারা একটি “প্রত্যাশার আলো” নামে গ্রুপ তৈরি করেছে। এই গ্রুপটির উদ্দেশ্য হলো, অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মানসিক সহায়তা প্রদান এবং তাদের মধ্যে সাহস যোগানো। তারা নিয়মিতভাবে ছোট ছোট আলোচনা সভার আয়োজন করে যেখানে একে অপরের সাথে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয় এবং মানসিকভাবে শক্তি সঞ্চয় করে।

বাংলাদেশ আর্মি এবং এয়ার ফোর্স দ্রুততম সময়ে উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে, তাদের পেশাদারিত্ব ছিল প্রশংসনীয়। ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা জীবন বাজি রেখে আগুন নিভিয়েছেন। পাশাপাশি, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সাধারণ জনতাও ত্রাণ ও সহায়তা কার্যক্রমে এগিয়ে এসেছেন। চিকিৎসকরা রাতারাতি অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করে আহতদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে, সংকটকালে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে পারি। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা মোকাবেলায় আমাদের সম্মিলিত শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। এই সফল কার্যক্রম বা প্রস্তাবিত বর্তমান পদক্ষেপগুলো সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে সাহায্য করা শুরু করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও ব্যাপকভাবে করবে। এর মাধ্যমে পাঠক সহজেই বুঝতে পারবে কিভাবে সকল সাধারণ জনতা এবং স্কুল শিক্ষার্থীর পাশাপাশি বিভিন্ন ফোর্স হিসেবে বর্তমান সময়ের উদ্যোগ ভবিষ্যতে সমাজের উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে। এই উদাহরণগুলো থেকে বোঝা যায়, সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং সঠিক পরিকল্পনা থাকলে যেকোনো বিপর্যয় মোকাবেলা করা সম্ভব।

২০২৫ সালের উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের বিমান দুর্ঘটনা আমাদের এক কঠিন শিক্ষা দিয়ে গেল। এই ঘটনা আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে যে, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও সচেতনতা কতটা জরুরি। এই সমস্যার সমাধানে গভীর চিন্তা এবং প্রস্তাবিত পদক্ষেপ সম্বন্ধে একটি শক্তিশালী উপসংহারের প্রয়োজন। এটি একটি সমাধানযোগ্য সমস্যা, এবং এটি সম্ভব যদি সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ভবিষ্যতে যাতে এমন মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা উচিত। এই রোডম্যাপে থাকবে নিরাপত্তা, সচেতনতা, মানসিক সহায়তা এবং সর্বোপরি মানবিকতার চূড়ান্ত উদাহরণ।

এই ঘটনা আমাদের শিখিয়ে গেল, জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। প্রতিটি ক্ষণকে আমাদের বাঁচতে হবে সতর্কতার সাথে, দায়িত্বশীলতার সাথে। এই মর্মান্তিক ঘটনা হয়তো আমাদের চোখ থেকে অশ্রু ঝরিয়েছে, কিন্তু একই সাথে এটি আমাদের ভেতরের ঘুমন্ত শক্তিকে জাগিয়ে তুলেছে। আসুন, আমরা এই শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করি, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলি এক নিরাপদ ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ। এই শোক থেকে আমরা যেন শিক্ষা নিয়ে নতুন করে শুরু করতে পারি। “আকাশের কান্না থমকে দিক না আমাদের পথচলা, আমরা হারাবো না; বরং প্রতিটি অশ্রুবিন্দু থেকে জন্ম নিক প্রতিরোধের নতুন সূর্য, যে আলোয় মুছে যাবে সকল আঁধার, জেগে উঠবে এক নতুন বাংলাদেশ— যেখানে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না, কোনো শিশুর স্বপ্ন হবে না অধরা।”

সংক্ষিপ্ত জীবনী :
ড: তারনিমা ওয়ারদা আন্দালিব বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইমপ্যাক্ট গ্রুপে গ্লোবাল কনসালট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত আছেন। 

দাউদ ইব্রাহিম হাসান বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় একজন রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট এবং সেই সাথে আইডিএলসি ফাইন্যান্স পিএলসি-এর মার্কেটিং বিভাগের একজন সদস্য। 

আফিফা শহীদ মাম একজন সৃজনশীল ও নিবেদিত লেখক,  এবং সেই সাথে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ও ইকোনমিক্স বিভাগের একজন অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.