ছবি: সংগৃহীত
বিচারক হিসেবে দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় প্রদানসহ জাল রায় তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এদিন কারাগার থেকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার উপস্থিতিতে শুনানি শুরু হয়।
শুনানি শেষে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখান। পরে এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজিজুল হক দিদার ও মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তবে আসামিপক্ষে কোন আইনজীবী ছিলেন না। এর আগে মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক খালেক মিয়া তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ওই আবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে খায়রুল হকের এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় খায়রুল হককে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো আবশ্যক।
আগামী ৪ আগস্ট আদালতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর তারিখ নির্ধারিত থাকলেও মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ওই তারিখ পরিবর্তন করে ৩০ জুলাই গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির আদেশ প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর আদালত খায়রুল হকের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য ৩০ জুলাই দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ২৭ আগস্ট রাতে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম।
মুজাহিদুল ইসলাম সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ে ‘জালিয়াতির’ অভিযোগ এনে বলেন, “বিচারপতি খায়রুল সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রভাবিত হয়ে অবসর পরবর্তী ভালো পদায়নের লোভে দুর্নীতিমূলকভাবে শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য ২০১১ সালের ১০ মে সংক্ষিপ্ত আদেশটি পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।”
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজন রিট আবেদন করেন। সেই মামলার শুনানি করে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। রিট আবেদনকারী ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেন আপিল বিভাগ। তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন এবিএম খায়রুল হক।
ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্য আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিলেন। কিন্তু ওই বছর সেপ্টেম্বরে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের সময় ‘জালিয়াতি’ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় ওইদিন রাতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ২৯ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি রায় দেওয়া ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় করা মামলায় তাকে ভার্চুয়ালি গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh