ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার (৩০ জুলাই) এ আদেশ দেন।
আদালতে ফারাবীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান।
আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম খান বলেন, '২০২১ সালে ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল চেয়ে ফারাবীর আপিল গ্রহণ করে হাইকোর্ট। এরপর এখন তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে। লিখিত আদেশ প্রকাশের পর জামিনের মেয়াদ জানা যাবে।'
জামিন আবেদনে বলা হয়, মামলায় চারজন সহঅভিযুক্ত আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও কেউই ফারাবীর নাম উল্লেখ করেনি। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তার বাইরে কোনো সাক্ষীও তাকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত করেননি। এছাড়া ফারাবী নিজেও কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। তিনি ২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে কারাগারে আছেন।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়কে। তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। তারা একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হন।
অভিজিতের প্রয়াত পিতা, পদার্থবিজ্ঞানী অজয় রায়, পরদিন শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।
২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল অভিজিৎ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করে। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মুজিবুর রহমান নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের পাঁচ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: বরখাস্ত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক (নিষিদ্ধ সংগঠনটির কথিত সমন্বয়ক), মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমন, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আকরাম হোসেন ওরফে আবির এবং মো. আরাফাত রহমান।
ট্রাইব্যুনাল প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করে।
এই মামলায় শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে তাকে আরও দুই বছর কারাভোগের আদেশ দেওয়া হয়।