বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) লিমিটেডের মধ্যে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন, পরিচালনা ও সংরক্ষণ বিষয়ক একটি সমঝোতা স্মারক আজ স্বাক্ষরিত হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিনিয়োগ ভবনের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) জনাব চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব শামীম আহমেদ, (বি. জে.) এনডিসি, পিএসসি।
বিডার পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন পরিচালক মো: মারুফুল আলম এবং ডেসকোর পক্ষে স্বাক্ষর করেন কোম্পানি সচিব প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
চুক্তির আওতায় বিডা ভবনের ছাদে ৯১০৫ বর্গফুট এলাকা জুড়ে ১৫০ কিলোওয়াট পিক ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সোলার সিস্টেম স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে ডেসকো। ২০ বছরের মেয়াদে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে প্রায় ৮৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সিস্টেম স্থাপন করা হবে এবং মেয়াদকালে রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিস্থাপন বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮৭ লক্ষ টাকা।
এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে আনুমানিক ২৮ লাখ ৫০ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে, যার অর্থমূল্য প্রায় ২ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। উৎপাদিত বিদ্যুতের ৯০ শতাংশ ব্যবহার করবে ডেসকো এবং অবশিষ্ট ১০ শতাংশের মূল্য বিডাকে প্রদান করা হবে। পাশাপাশি অর্জিত কার্বন ক্রেডিট সমানভাবে ভাগ হবে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে।
প্রকল্পের কাজ আগামী ১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে টেন্ডার আহ্বানের মাধ্যমে শুরু হয়ে ৩১ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে উৎপাদন শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে সরকারের ঘোষিত লক্ষ্য—২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ—পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, “এই প্রকল্পটি সরকারি দপ্তরের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, যা ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্যও মডেল হিসেবে কাজ করবে।”
উল্লেখ্য যে ২০২৫ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ন্যাশনাল রুফটপ সোলার প্রোগ্রাম চালু করে, যার আওতায় সরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ৩,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচি ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের জাতীয় লক্ষ্যে পৌঁছাতে এক মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।