× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন নিয়ে হাদিসে যা বর্ণিত আছে

ডেস্ক রিপোর্ট।

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত।

কোরআন ও হাদিসে কিয়ামতের যত আলামতের কথা বর্ণিত হয়েছে  তার মধ্যে অন্যতম হলো ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন। এ বিষয়ে হজরত হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে—

আমরা কয়েকজন সাহাবি একদিন পরস্পর কিছু আলোচনা করছিলাম। ইতিমধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন : তোমরা কি বিষয়ে আলোচনা করছ? আমরা বললাম: আমরা কেয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করছি। তিনি বললেন : যে পর্যন্ত দশটি আলামত প্ৰকাশ না পায়, সে পর্যন্ত কেয়ামত কায়েম হবে না। তিনি দশটি আলামতের মধ্যে ইয়াজুজ-মাজুজের আত্মপ্রকাশও উল্লেখ করলেন। (মুসলিম, হাদিস : ২৯০১)

ইয়াজুজ-মাজুজ মানব সম্প্রদায়ভুক্ত। অন্যান্য মানবের মতো তারাও নূহ আলাইহিস সালাম-এর সন্তান-সন্ততি। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, আর তার বংশধরদেরকেই আমি অবশিষ্ট রেখেছিলাম। (সুরা আস-সাফফাত, আয়াত : ৭৭) 

অর্থাৎ নুহের মহাপ্লাবনের পর দুনিয়াতে যত মানুষ আছে এবং থাকবে, তারা সবাই নূহ আলাইহিস সালাম-এর সন্তান-সন্ততি হবে। 

নাওয়াস ইবনে সামআন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস থেকে ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। এই হাদিসে দাজ্জালের ঘটনা ও তার ধ্বংসের কথা বিস্তারিত বর্ণনার পর বলা হয়েছে।

এ সময় আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করবেন : আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে এমন লোক বের করব, যাদের মোকাবেলা করার শক্তি কারো নেই। কাজেই (হে ঈসা!) আপনি মুসলিমদেরকে সমবেত করে তুর পর্বতে চলে যান। (তখন ঈসা (আ.) পৃথিবীতে আগমন করবেন।)

আল্লাহর আদেশ মেনে তিনি তাই করবেন। তখন আল্লাহ তায়ালা ইয়াজুজ-মাজুজের রাস্তা খুলে দেবেন। তারা এতো দ্রুত গতিতে চলাফেরা করবে যে, তাদের দ্রুত চলার কারণে মনে হবে যেন উপর থেকে পিছলে নীচে এসে পড়ছে। তাদের প্রথম দলটি তবরিয়া উপসাগরের কাছ দিয়ে যাবে। এ সময় তারা সাগরের সব পানি পান করে এমন অবস্থা করে দেবে যে, দ্বিতীয় দলটি এসে সেখানে এমন অবস্থা দেখবে যে, মনে হবে এখানে কোনো দিন পানি ছিল না।

আব্দুর রহমান ইবনে ইয়ায়ীদের বর্ণনায় ইয়াজুজ-মাজুজের কাহিনীর আরও অধিক বিবরণ পাওয়া যায়। তাতে রয়েছে , তবরিয়া উপসাগর অতিক্রম করার পর ইয়াজুজ-মাজুজ বায়তুল মোকাদ্দাস সংলগ্ন পাহাড় জাবালুল-খমরে আরোহণ করে ঘোষণা করবে : আমরা পৃথিবীর সমস্ত অধিবাসীকে হত্যা করেছি। এখন আকাশের অধিবাসীদেরকে খতম করার পালা। তখন তারা আকাশের দিকে তীর নিক্ষেপ করবে। আল্লাহর আদেশে সে তীর রক্তরঞ্জিত হয়ে তাদের কাছে ফিরে আসবে। এতে বোকারা এই ভেবে আনন্দিত হবে যে, আকাশের অধিবাসীরাও শেষ হয়ে গেছে। (মুসলিম, হাদিস : ২৯৩৭)

ঈসা আলাইহিস সালাম ও তার সঙ্গীরা তুর পর্বতে আশ্রয় নেবেন। অন্যান্য মুসলিমরা নিজ নিজ দূর্গে ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেবে। পানাহারের বস্তুসামগ্ৰী সাথে থাকবে, কিন্তু তাতে ঘাটতি দেখা দেবে। ফলে একটি গরুর মাথাকে একশ’ দীনারের থেকেও মূল্যবান মনে করা হবে। 

ঈসা আলাইহিস সালাম ও অন্যান্য মুসলিমরা কষ্ট লাঘবের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। আল্লাহ দোয়া কবুল করবেন। তিনি মহামারী আকারে রোগব্যাধি পাঠাবেন। এতে অল্প সময়ের মধ্যেই ইয়াজুজ-মাজুজের গোষ্ঠী সবাই মরে যাবে।

এরপর ঈসা আলাইহিস সালাম সঙ্গীদেরকে নিয়ে তুর পর্বত থেকে নিচে নেমে এসে দেখবেন পৃথিবীর সব জায়গায় তাদের মৃতদেহ পড়ে আছে। অর্ধহাত পরিমাণ স্থানও খালি নেই। মৃতদেহ পচে অসহ্য দুৰ্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। 

এ অবস্থা দেখে এই বিপদও দূর করার জন্য ঈসা আলাইহিস সালাম ও তার সঙ্গীরা আবারও আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। 

আল্লাহ তায়ালা এ দোয়াও কবুল করবেন এবং বিরাটাকার পাখি প্রেরণ করবেন, যাদের ঘাড় হবে উটের ঘাড়ের মত। তারা মৃতদেহগুলো উঠিয়ে যেখানে আল্লাহ ইচ্ছা করবেন, সেখানে ফেলে দেবে। 

কোন কোন বর্ণনায় এসেছে, মৃতদেহগুলো সমুদ্রে নিক্ষেপ করবে। এরপর মুষলধারে বৃষ্টি হবে। কোন নগর ও বন্দর এ বৃষ্টি থেকে বাদ থাকবে না। ফলে সমগ্র ভূপৃষ্ঠ ধুয়ে কাঁচের মতো পরিস্কার হয়ে যাবে।

এরপর আল্লাহ তায়ালা ভূপৃষ্ঠকে আদেশ করবেন— তোমার পেটের সমুদয় ফল-ফুল উদগীরণ করে দাও এবং নতুনভাবে তোমার বরকতসমূহ প্ৰকাশ কর। ফলে তাই হবে এবং এমন বরকত প্রকাশিত হবে যে একটি ডালিম একদল লোকের আহারের জন্য যথেষ্ট হবে এবং মানুষ তার ছাল দিয়ে ছাতা তৈরি করে ছায়া লাভ করবে। 

দুধে এত বরকত হবে যে, এক উটের দুধ একদল লোকের জন্য, একটি গাভীর দুধ এক গোত্রের জন্য এবং একটি ছাগলের দুধ একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে। 

চল্লিশ বছর যাবত এই অসাধারণ বরকত ও শান্তি-শৃংখলা অব্যাহত থাকার পর যখন কেয়ামতের সময় সমাগত হবে; তখন আল্লাহ তায়ালা একটি মনোরম বায়ু প্রবাহিত করবেন। এর পরশে সব মুসলিমের বগলের নীচে বিশেষ এক প্রকার রোগ দেখা দেবে এবং সবাই মৃত্যুমুখে পতিত হবে; শুধু কাফের ও দুষ্ট লোকেরাই পৃথিবীতে থেকে যাবে। তারা ভূ-পৃষ্ঠে জন্তু-জানোয়ারের মত খোলাখুলিই অপকর্ম করবে। তাদের উপরই কেয়ামত আসবে। (মুসলিম, হাদিস : ২৯৩৭)

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.