জেনেভাভিত্তিক প্রবাসী সংগঠন “বাংলাদেশ ক্লাব জেনেভা”-র নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে। আগামী তিন বছরের জন্য নুরুল ইসলাম সভাপতি, মারুফ আনোয়ার সাধারণ সম্পাদক এবং তানভীর আলম চৌধুরী কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনের ত্রিবার্ষিক কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন ও বার্ষিক সাধারণ সভা রোববার জেনেভার স্থানীয় এক কমিউনিটি হলে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি হারুন রশিদ এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম।
সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন পরিচালনা করেন সাবেক সভাপতি হারুন রশিদ এবং কমিটি সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম জাজ। ঘোষিত নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী তিনটি পদেই একটিমাত্র মনোনয়নপত্র জমা পড়ায় নির্বাচন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সম্পন্ন হয়।
নির্বাচিত সভাপতি নুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আনোয়ার তাঁদের বক্তব্যে সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য কার্যকর করে তুলতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
তারা বলেন, “প্রবাসে থেকেও বাংলাদেশ ক্লাব জেনেভা বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মানবিক মূল্যবোধকে লালন ও প্রচার করে যাবে।” নেতৃবৃন্দ আরও জানান, সদস্যদের পরামর্শক্রমে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রবাস জীবনে থেকেও বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐক্য ও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষা করাই সবসময় বাংলাদেশ ক্লাব জেনেভার মূল লক্ষ্য। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠনটি সুইজারল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রায় ৩০ বছর আগে জেনেভায় একদল তরুণ প্রবাসী “প্রবাস” নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে “বাংলাদেশ ক্লাব জেনেভা” নামে পরিচিতি পায়। ২০১৯ সালে সংগঠনটি সুইজারল্যান্ড সরকারের আনুষ্ঠানিক নিবন্ধন লাভ করে এবং বর্তমানে এটি দেশটির একমাত্র নিবন্ধিত বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত।
একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ ক্লাব জেনেভা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য নানা জাতীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে — যার মধ্যে ঈদ, পূজা, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস এবং পহেলা বৈশাখ উদযাপন উল্লেখযোগ্য। সংগঠনটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায়ও সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছে।
অনুষ্ঠানে প্রায় দুই শতাধিক বাংলাদেশি প্রবাসী অংশ নেন। ঘরোয়া পরিবেশে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানটি শেষ হয় স্নেহমিশ্রিত উষ্ণ পরিবেশে, যেখানে পরিবেশন করা হয় ঘরে তৈরি ঐতিহ্যবাহী পায়েশ, মিষ্টি এবং প্রবাসী বাংলাদেশি নারীদের রান্না করা রাতের খাবার।