সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বৈধ ঘোষণা করে এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ১০টায় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই রায় দেন।
রায়ে বলা হয়- আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা।
এর আগে গেল ৬ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আপিল বিভাগকে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় সমাজে গভীর ক্ষতি করেছে। এটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করেছে এবং সমাজব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এমনকি মৃত ব্যক্তিও রাতের ভোটে অংশ নিতে পারবে—এ ধরনের অবাস্তব ঘটনা জাতি দেখেছে।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য আবেদন করা হয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
প্রথম দিনের শুনানি শুরু হয় ২১ অক্টোবর, এবং ২২, ২৩, ২৮, ২৯ অক্টোবর এবং ২, ৪, ৫, ৬ নভেম্বর টানা শুনানি চলে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে এম. সলিমউল্লাহসহ তিনজন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে। পরে ২০০৫ সালে আপিল করা হয়, যা ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে বৈধ ঘোষণা করে।
ঘোষিত রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস হয়, যা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপসহ অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (১৬ অক্টোবর) এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার (২৩ অক্টোবর) রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আলাদাভাবে আবেদন করেন।