× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

অবাধে বালু উত্তোলন: পদ্মায় রশিদ সিকদারদের বালুদস্যুতা থামবে কবে?

বিশেষ প্রতিনিধি

২৭ এপ্রিল ২০২২, ০৮:২৩ এএম

লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রশিদ সিকদার

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিকান্দির বালুদস্যু সিন্ডিকেট পদ্মা নদীর গভীরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে পদ্মা সেতু এলাকাও হুমকির মুখে পড়েছে। শিমুলীয়া ফেরি ঘাট থেকে পূর্ব দিকে তাকালেই ড্রেজারের বহর চোখে পরলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বছরের পর বছর বিভিন্ন কৌশলে লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রশিদ সিকদার ও জাজিরার মাঝিকান্দি গ্রামের ভূমিদস্যু ওহাব মাঝি সিন্ডিকেট পদ্মা নদীর গভীর থেকে অবৈধ ড্রেজিং এর মাধ্যমে এই বালু উত্তোলন করে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। সংবাদ সারাবেলার অনুসন্ধানে এমনটিই উঠে এসেছে।

নদীর এপারে লৌহজংয়ের শিমুলিয়া, ওপারে জাজিরার মাঝিকান্দি দুপার থেকেই পদ্মার মাঝ নদীতে সমঝোতার ভিত্তিতে ড্রেজার মেশিন সিন্ডিকেটের সদস্যরা বালু উত্তোলন পরিচালনা করে আসছে।  দিনরাত মাঝ নদীতে বিরামহীনভাবে ড্রেজার মেশিনে উত্তোলন করা বালু বলগেটে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিক্রয় সিন্ডিকেটের হাতে। কালোবাজারি মাফিয়া চক্র এসব সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাধার মুখে পরলেই এসব মাফিয়ারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তাদের শায়েস্তা করার জন্য। জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ আমলা বরাবরই বালুদস্যু মাফিয়াদের লালন পালন করে আসছে। ফলে কোনভাবেই নির্মূল করা যাচ্ছেনা বালুদস্যু সিন্ডিকেটকে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে এক মুক্তিযোদ্ধা এমনটি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বালুদস্যু সিন্ডিকেটের হোতা রশিদ শিকদারের দেশপ্রেম নেই। এ কারণে তারা নদীর গভীরের বালু উত্তোলন করে দেশের ক্ষতি করছে। পদ্মানদীর গভীরের মূল্যবান সম্পদ লুট করে নদীকে ধ্বংস করছে। সরকারি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা চ্যালেঞ্জ করছে রাষ্ট্রকে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলেই রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ ঘটে বালু দস্যু সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা রশিদ সিকদারের। নদীর অবৈধ বালি উত্তোলনের কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তিনি বাগিয়ে নেন লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ। এরপর আর রশিদ সিকদারকে পিছন ফিরে তাকাতে  হয়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০০ সালে এই রশীদ সিকদারের লৌহজং বৌলতলী গ্রামের টিনের ঘর থাকলেও এখন তা আলিশান ভবন। রাজধানীর টিপু সুলতান রোডে অভিজাত ভবনে রয়েছে আলিশান ফ্ল্যাট।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে রশিদ সিকদারের দলে যোগদান করে বালুদস্যু সিন্ডিকেটের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হয়ে যান লৌহজং ফরিয়া গ্রামের সেলিম দেওয়ান। বর্তমানে লৌহজংয়ের কুমারভোগ ইউনিয়নের খড়ীয়া গ্রামের সেলিম দেওয়ানের আলিশান বাড়ি। স্ত্রী সন্তানদের  নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। মূলত এই দুই বালু সিন্ডিকেটের মাফিয়ার দৃশ্যমান কোনো আয় নেই। সরকারি ও দেশের সম্পদ লুটপাট করে এরা কোটিপতি। সিন্ডিকেট সদস্যদের সাথে যারা জড়িত সকলেই অবৈধ টাকায় এখন রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এসব মাফিয়ারা গিলে ফেলছে স্থানীয় আওয়ামী লীগকে। এদের প্রতিহত করতে না পারলে পদ্মা নদীর দু'পাড়ের কৃষিজমি বাড়িঘর নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে।  অপরদিকে নদীর পরিবেশ ধ্বংস হয়ে পড়বে।

এবিষয়ে লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রশিদ সিকদারের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সংবাদ সারাবেলাকে জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে তিনি জড়িত নন। পদ্মানদীতে অবৈধ ড্রেজিংয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা বলেছেন, আপনি তাদের এই কাজে নিয়োজিত করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সংবাদ সারাবেলাকে বলেন, আমি রাজনীতিবিদ , সুবিধা নেয়ার  জন্য হয়তো তারা বলেছেন, তবে আমি এর সাথে সংশ্লিষ্ট নই। তবে তিনি আনকোট উল্লেখ করে বলেন, দলীয় ছেলেপেলেরা বালু উত্তোলন করে থাকতে পারে এর সাথে আমি জড়িত না।

কুমারভোগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম দেওয়ান বলেন, আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সারাবেলায় আর আগেও  সংবাদ প্রকাশ করেছে বাস্তবে আমি জড়িত নই। ড্রেজার চলছে নদীর ওইপারে শরিয়তপুরে জাজিরার নাওডোবা এলাকায়। তিনি মাত্র একটি ড্রেজার চালাচ্ছেন চায়না কোম্পানির সাথে চুক্তি করে পদ্মা ব্রিজের বৈধ বালু উত্তোলনের জন্য। তিনি আরও বলেন, আমার নামে বেনামে কোন সম্পত্তি নেই। আমার নিজেস্ব কোন ভবন নেই। টিনের ঘরে আমি পরিবার নিয়ে থাকছি। এদিকে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আবদুল আউয়াল সংবাদ সারাবেলাকে জানান, পদ্মানদীতে অবৈধ ড্রেজিং রোধে আমাদের অভিযান চলছে। রশিদ সিকদার সিন্ডিকেটের অবৈধ বালু উত্তোলন বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান তিনি।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.