দেশের নব্যনিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করেছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এর পরিবর্তে সংস্কার আনতে নতুন দল গঠনের চিন্তাভাবনা করছেন তাঁরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্যই করেছেন ছাত্র আন্দোলনের চার শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এসব শিক্ষার্থী আশা করছেন, গত ১৫ বছর যা হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। এই ১৫ বছরে ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে শক্ত হাতে দমন-পীড়ন করেছেন শেখ হাসিনা।
গত তিন দশকের বেশির ভাগ সময় ক্ষমতায় ছিল হয় আওয়ামী লীগ, নয়তো বিএনপি। এই দুই দলের সর্বোচ্চ নেতা শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার বয়স এখন সত্তরের বেশি।
এমন অবস্থায় দেশে সংস্কার আনতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে আলোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। রয়টার্সকে এমনটাই বলেন মাহফুজ আলম নামের এক শিক্ষার্থী। সরকার এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে লিয়াজোঁ করতে গঠিত কমিটির প্রধানের দায়িত্বে আছেন তিনি।
এ ব্যাপারে মাহফুজ আলম বলেন, "দুই রাজনৈতিক দলের ওপর মানুষ আসলেই ক্লান্ত–বিরক্ত। আমাদের ওপর তাদের আস্থা রয়েছে।"
এ নিয়ে সমন্বয়ক তাহমিদ চৌধুরী বলেন, তাদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এর মূল ভিত্তি হবে অসাম্প্রদায়িকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা।
তবে, অর্ন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দুজন ছাত্র প্রতিনিধি এ ব্যাপারে খোলাশা করে কিছু বলেননি। এমনকি কোন পলিসি নিয়ে তাঁরা কাজ করতে চাইছেন, সেটাও জানাননি। তবে, নির্বাচন কমিশনে ব্যাপক সংস্কারের কথা বলছেন।
এ নিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই আন্দোলনের স্পিরিট ছিল মূলত নতুন বাংলাদেশ গঠন করা, যেখানে কোনো ফ্যাসিস্ট বা স্বৈরাচার আর থাকবে না। তা নিশ্চিত করতে গঠনগত সংস্কার দরকার। এতে কিছু সময় তো লাগবেই।’
দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে যে দাবি জানানো হচ্ছে, তা অন্তর্বর্তী সরকার আমলে নিচ্ছে না বলে রয়টার্সকে বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, ও পুলিশ প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা সরকারের সময় নিয়োগ প্রাপ্তরা। ছাত্ররা নতুন দল গঠন করেছেন কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, তাদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়নি। তবে, রাজনৈতিক ধারা পরিবর্তন হবে। কেননা এতদিন এই রাজনীতি থেকে তরুণদের বাদ রাখা হতো।