বহুল আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য (হবিগঞ্জ-৪) ব্যারিস্টার সুমন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। সোমবার মধ্যরাতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে এই থানা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আসামিকে রাখা হয়েছে পল্লবী থানায়। পেশায় আইনজীবী হলেও ব্যারিস্টার সুমনের দেশব্যাপী পরিচিতি মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে। ভার্চুয়াল এ জগতে তিনি ব্যাপক সক্রিয় ছিলেন একসময়। যা নয় তাই নিয়েই যখন তখন ফেসবুকে লাইভ করতেন। মানুষের নজর কাড়ার চেষ্টায় থাকতেন। তাতে সফলও হন।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগমুহূর্তেও একটি ভিডিও বার্তা দেন ব্যারিস্টার সুমন। সেই ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘‘আমি পুলিশের সঙ্গে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই।’অন্যদিকে ভিডিও বার্তায় সুমনকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রথমেই জানাতে চাই আমি দেশেই রয়েছি। ঢাকা শহরেই আছি। ৫ আগস্টের পর আমি কোথাও যায়নি। শুধু নিরাপত্তার কারণে আমি গোপনে ছিলাম।’
সুমন দাবি করেন, ‘৫ আগস্টের পর অনেকেই আমাকে বলেছেন যে, তুমি বিদেশে চলে যাও। কিন্তু আমি যাইনি। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমি কোনো দিন দুর্নীতি করিনি। ঢাকা শহরে আমার কোনো প্লট ও ফ্লাট নেই। তারপরও কেন আমি দেশ ছেড়ে যাবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার নামে যদি কোনো মামলা হয়ে থাকে তাহলে তা আইনের মাধ্যমে মোকাবিলা করব। যেহেতু আমি আইনজীবী, আইনের প্রতি আমার বিশ্বাস রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, সামাজিক মাধ্যমের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে গত বছর ঢাকঢোল পিটিয়ে রাজনীতির মাঠে নেমে পড়েন ব্যারিস্টার সুমন। চেষ্টা করেন তখনকার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে ঘেঁষার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলটির মনোনয়নপত্র কেনেন। কিন্তু মনোনয়ন পাননি।
এরপর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন ব্যারিস্টার সুমন। ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে বিপুল ভোটে পাসও করেন। কিন্তু সংসদ সদস্য হিসেবে থাকতে পারলেন না একটি বছরও।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের মধ্যদিয়ে তার সরকারের অন্য মন্ত্রী-এমপির মতো পদ হারিয়েছেন সুমনও। শুধু তাই নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাস করার পরও গত আড়াই মাস ধরে তিনি ছিলেন আত্মগোপনে। অবশেষে শ্রীঘরে।