আজ (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানী ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে চলছে একটি বিশাল জমায়েত, যেখানে দেশের তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দেশের নানা স্থান থেকে আসা হাজারো মানুষ অংশ নিতে এসেছেন। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক উপস্থিতি তরুণ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তারা নতুন রাজনৈতিক দলটির মাধ্যমে দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করার জন্য শপথ নিতে প্রস্তুত।
জয়পুরহাট থেকে আসা শিক্ষার্থী মঞ্জিল হাসান মুরাদ জানান, তারা প্রায় ২০০ জনের একটি দল নিয়ে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন। তিনি বলেন, “আমরা চাই, আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এমন একটি দল আত্মপ্রকাশ করুক, যা দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে এবং বাংলাদেশের উন্নতি সাধন করবে।”
বরিশাল থেকে আসা সিফাত ইসলাম জানান, “বাংলাদেশে রাজনৈতিক হানাহানি দেখে আমরা এবার এমন একটি দলের আত্মপ্রকাশ চাই, যা দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে।” তিনি এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ হতে পেরে গর্বিত।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অনেক নেতা, কূটনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের উপস্থিতি থাকবে। দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে মঞ্চের প্রস্তুতি প্রায় শেষ, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পুরো আয়োজনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছেন। সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি, পোশাকধারী ও অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
এই অনুষ্ঠানে আগতদের জন্য পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা, মেডিকেল টিম, পুলিশ বুথ এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশেষ করে, নারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
দলটির পক্ষ থেকে মুশফিক উস সালেহীন জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার পর শুধুমাত্র মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথ দিয়ে মঞ্চের সামনের সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করা যাবে।
এদিকে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বাংলামোটরে অনুষ্ঠিত এক যৌথ বৈঠকে দলের নাম এবং নেতৃত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সারজিস আলমকে দক্ষিণ ও উত্তরের মুখ্য সংগঠক হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়াও নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী এবং হান্নান মাসুদকে মুখ্য সমন্বয়ক এবং যুগ্ম সমন্বয়ক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
এই নতুন রাজনৈতিক দলটি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত নেতৃত্ব দেবেন বলে জানা গেছে, এবং তারা জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সম্মুখযোদ্ধাদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাবে।