বাংলাদেশ
ইসলামী ছাত্রশিবির ভারতে মুসলমানদের ওপর সাম্প্রতিক বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, ক্ষোভ এবং নিন্দা প্রকাশ করেছে। আজ (১৯ মার্চ) এক
বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল
নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
নেতারা
বলেন, ভারতে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যা আমাদের গভীর
উদ্বেগের কারণ। সম্প্রতি লাউডস্পিকারে আজান দেওয়ার অভিযোগে এক ইমামের বিরুদ্ধে
মামলা করা হয়েছে, হোলির অজুহাতে মুসলিমদের নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং নামাজরত মুসল্লিদের ওপর সরাসরি হামলা চালানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
গণমাধ্যমের তথ্যমতে, একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী মসজিদের সামনে জড়ো হয়ে নামাজ শেষে বের হওয়া মুসল্লিদের মারধর করেছে এবং ‘জয় শ্রী রাম’
স্লোগান দিয়েছে। হামলাকারীদের হাতে মদের বোতল ছিল, যা দিয়ে তারা
মুসল্লিদের উত্ত্যক্ত করে। এছাড়া রোজাদার মুসলিমদের জোরপূর্বক হোলির রং মাখানো, প্রতিবাদ
করলে তাদের মারধর করা এবং নারী ও শিশুদের ওপর
হামলার মতো ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল (১৮
মার্চ) নাগপুরের মহাল এলাকায় মুসলিম ঐতিহ্য মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কবর সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল মুসলিমদের ওপর
ব্যাপক হামলা ও নির্যাতন চালায়।
এসব সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতার স্পষ্ট প্রমাণ।
নেতারা
আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে ক্রমাগত নীতিবাক্য শোনানো ভারত নিজ দেশে সংখ্যালঘুদের জন্য এক ভয়াবহ নিপীড়নে
পরিণত করেছে। ২০১৫-২০১৮ সালে গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগে ৪৪ জন মুসলিমকে
হত্যা, ২০২০ সালে দিল্লি দাঙ্গায় মুসলমানদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া, ২০২২ সালে কর্ণাটকে হিজাব নিষিদ্ধ করা, ২০২৩ সালে মুসলিমদের শত শত ঘরবাড়ি
বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া— এমন অব্যাহত নিপীড়নের ফলে ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে।
নেতারা
বলেন, কোনো ধর্মই কখনও সহিংসতাকে সমর্থন করে না। তবে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস ও তাদের রাজনৈতিক
শাখা বিজেপি ‘অখণ্ড ভারত ও রাম রাজত্ব'
প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও মুসলিম নিধনের
ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সাম্প্রতিক হামলাগুলো তাদের এই গভীর ষড়যন্ত্রের
অংশ, যা ভারতকে একটি
উগ্র সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করার নীলনকশার বাস্তবায়ন।
এ
নির্যাতন শুধু ভারতীয় মুসলমানদের সমস্যা নয়, এটি গোটা বিশ্বের শান্তিকামী ও ন্যায়পরায়ণ মানুষের
জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। আমরা ভারত সরকারের প্রতি মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার এবং সংখ্যালঘুদের ওপর সব নিপীড়ন বন্ধের
আহ্বান জানাচ্ছি।