মানবতাবিরোধী
অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য আগামী ৬ মে দিন
ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। ওই দিন আপিল
বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হবে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, ৬ মে তারিখে
আজহারের আপিলটি কার্যতালিকার শীর্ষে থাকবে।
আজ (২২ এপ্রিল) প্রধান
বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত
আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে, ২৬ ফেব্রুয়ারি সর্বোচ্চ
আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এটিএম আজহারের আপিল শুনানির অনুমতি দেয়। সেই সঙ্গে আসামিপক্ষকে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতের
এ সিদ্ধান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধসংক্রান্ত মামলাগুলোর মধ্যে এক নতুন দৃষ্টান্ত
স্থাপন করেছে। এটিই প্রথম ঘটনা, যেখানে রিভিউ আবেদন মঞ্জুর করে মূল আপিল শুনানির অনুমতি দেওয়া হলো। এর আগে, ২০
ফেব্রুয়ারি আজহারের রিভিউ আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় থাকলেও শুনানি হয়নি। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি শুনানির
জন্য দিন ধার্য করা হয় এবং ২৫
ফেব্রুয়ারি প্রথম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতে
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। শুনানিতে আরও উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর
আগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ নয়
ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।
এই অভিযোগগুলোর মধ্যে ছয়টি প্রমাণিত হয় এবং পাঁচটি
অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে ট্রাইব্যুনাল। জামায়াতে ইসলামী অবশ্য এ রায়কে প্রহসনের
রায় বলে দাবি করে আসছে।
২০১৫
সালের ২৮ জানুয়ারি আজহারের
আইনজীবীরা ১১৩টি যুক্তি তুলে ধরে খালাস চেয়ে আপিল করেন। তারা আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল
আবেদন এবং ২,৩৪০ পৃষ্ঠার
বিস্তারিত নথিপত্র দাখিল করেন। পরে ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর তৎকালীন
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ আজহারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই রিভিউ আবেদন করেন আজহারুল ইসলাম, যা এখন পূর্ণাঙ্গ
আপিল শুনানিতে গড়াচ্ছে।