জামায়াতে
ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, দলটির নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের এখনও মুক্তি না পাওয়ায় তারা
হতাশ নন, তবে বিস্মিত ও ব্যথিত। আজ
(২২ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে
তিনি এ কথা বলেন।
গোলাম
পরওয়ার বলেন, আট মাস আগে
স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। সেই সময় ফ্যাসিস্ট শাসনের অধীনে যেসব রাজনৈতিক বন্দি কারাগারে ছিলেন, তাদের অধিকাংশই মুক্তি পেয়েছেন। অথচ মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত হলেও এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনো কারাগারে রয়েছেন। এ অবস্থাকে তিনি
দুঃখজনক ও সকলের ব্যর্থতা
হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা আদালতের প্রতি আস্থা রাখি।
এদিকে
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানির জন্য আগামী ৬ মে তারিখ
নির্ধারণ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত
আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির একটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ওইদিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আদালত জানায়, শুনানার দিন আজহারের আপিলটি কার্যতালিকার শীর্ষে থাকবে।
আজহারের
পক্ষে আদালতে শুনানি করবেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী ও আইনজীবী শিশির
মনির। এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল এবং জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের একটি দল।
২০১৪
সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে সংগঠিত গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুটপাটসহ ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এই দণ্ড দেওয়া
হয়। ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর আপিল
বিভাগ সেই রায় বহাল রাখে।
পরে
আজহারের পক্ষে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করা হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় রিভিউ আবেদনটির
শুনানি। ২৬ ফেব্রুয়ারি আপিল
বিভাগ এই রিভিউ গ্রহণ
করে এবং মূল আপিলের শুনানির অনুমতি দেয়, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের
মামলার ক্ষেত্রে একটি নজিরবিহীন ঘটনা।
উল্লেখ্য,
জামায়াত নেতা আজহারের পক্ষে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি দাখিল
করা আপিলে ১১৩টি যুক্তির ভিত্তিতে তার নির্দোষ প্রমাণের দাবি জানানো হয়। আপিলের নথিপত্রে মোট ২৩৪০ পৃষ্ঠা যুক্ত করা হয়।