আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, তারা ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছে। নৌকা মার্কাকে এ দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে।
আজ (২ মে) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে নামতে হচ্ছে—এটাই আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতা। আমরা হতাশ, অন্তর্বর্তী সরকার এখনো তাদের বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি। বরং আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিচার চলা পর্যন্ত আইন করে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে দলটির রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। বিগত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠা করেছে। মানুষ তখন রাস্তায় নামেনি, বরং ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, মুজিববাদী ৭২’র সংবিধানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভারতের কাছে সমর্পণ করা হয়েছিল। তখনই ভাষার অধিকার হরণ এবং অর্থনীতিকে লুটপাটের রক্ষীবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
নাহিদ ইসলাম নতুন সংবিধানের দাবিতে গণপরিষদ নির্বাচনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণপরিষদ নির্বাচনও একসাথে অনুষ্ঠিত হতে হবে। রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান নির্বাচন সংস্কার কমিশন আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট মত দিচ্ছে না। এমনকি কমিশনের প্রস্তাবেও নির্বাচন কমিশনের সম্মতি নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, এই নির্বাচন কমিশন আসলে কার স্বার্থে কাজ করছে?
সমাবেশে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা শেখ হাসিনার বিচারের বিরোধিতা করছেন, তারা সাংবাদিক নন—আওয়ামী লীগের দোসর।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, জুলাই মাসের শহীদ ও আহতদের যথাযথ মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একইসাথে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুনর্বাসন পাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে দেশব্যাপী গণআন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রতিটি পাড়ায়-পাড়ায় ফ্যাসিবাদবিরোধী মঞ্চ গঠন করতে হবে। জনসম্পৃক্ত আন্দোলনের মাধ্যমেই এই দলকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব।