গণমাধ্যমে
সরকারি হস্তক্ষেপ আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
আজ
(৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায়
তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ
ইসলাম বলেন, গণমাধ্যম নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার বিষয়টি
নতুন কিছু নয়। তার উপদেষ্টা থাকাকালেও গণমাধ্যম নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৬ বছরে
ফ্যাসিস্ট সরকার বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ চালিয়েছে এবং গণমাধ্যমও তার বাইরে ছিল না। ফলে গণমাধ্যমকে সেই দলীয় প্রভাব এবং আধিপত্য থেকে মুক্ত করে একটি স্বাধীন অবস্থানে নিতে হলে সুপরিকল্পিত রূপরেখা দরকার।
তিনি
আরও বলেন, যদি গণমাধ্যম আধিপত্যের ভেতরেই আটকে থাকে, তাহলে জুলাই পরবর্তী সময়ে যে মুক্ত গণমাধ্যম
কাঠামোর কথা ভাবা হচ্ছে, সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
অন্তর্বর্তীকালীন
সরকারের সময়েও গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে এর
ভুক্তভোগী হয়েছেন তারা। গণমাধ্যমগুলোকে আরও পেশাদার হতে হবে, যাতে ভুল ব্যাখ্যা বা মিথ্যা তথ্য
দিয়ে কারও অবস্থান বিকৃত না হয়।
তিনি
দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এই বিলম্ব অনাকাঙ্ক্ষিত
এবং দ্রুত এসব বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম
কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গণমাধ্যমের
মালিকানা প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, মালিকানার কাঠামো আরও স্বচ্ছ ও নির্ধারিত হওয়া
দরকার। বর্তমানে অনেক কর্পোরেট বা রাজনৈতিক গোষ্ঠী
গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছে, ফলে গণমানুষের কণ্ঠস্বর উঠে আসছে না। এজন্য কর্পোরেট মালিকানায় গণমাধ্যমের সংখ্যা নির্ধারণে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি
জানান, অতীতে গণমাধ্যম বিভিন্ন সময় সরকারি চাপের মুখে পড়েছে, তবে বর্তমানে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তার দায়িত্বকালেও গণমাধ্যমের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ কম ছিল বলে
দাবি করেন তিনি। তবে একইসঙ্গে বলেন, কোনো গণমাধ্যম বন্ধ করার পক্ষে নয় তারা, বরং
গণমাধ্যমের ভেতরে যে ফ্যাসিবাদী আচরণ
রয়েছে, সেটির বিরুদ্ধেই তারা কথা বলেন।
আলোচনা
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী।