বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারের আওতায় আনার দাবি বিএনপি আগেই তুলে ধরেছিল। তিনি বলেন, ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে দেওয়া পত্রে আমরা এই দাবি জানিয়েছিলাম। এরপর ১৬ এপ্রিলের সর্বশেষ সাক্ষাতেও, আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি— পতিত ফ্যাসিবাদী দল এবং সেই সরকারের সঙ্গে যুক্ত সকল ব্যক্তিকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করে দেশের রাজনীতি থেকে জঞ্জাল সরাতে হবে।
আজ (১১ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি জানান, আলোচনার সময় বারবার তারা বলেছেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব এবং এটি করা উচিত। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের মুহূর্তে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর প্রশাসনিক আদেশে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও বিএনপি অবস্থান নিয়েছিল, কারণ রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করতে হবে আইনি পদ্ধতিতে, প্রশাসনিকভাবে নয়।
তিনি বলেন, আমরা আনন্দিত যে বিলম্বে হলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দ্রুত করার এবং বিচার কার্য নির্বিঘ্ন করতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গুম, খুন, নিপীড়ন ও দীর্ঘ সময় ধরে জনগণের ওপর অপশাসন চালানো ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আইন সংশোধন করে বিচারিক প্রক্রিয়া চালানোর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় বিএনপি।
তবে ফখরুল বলেন, সরকার যদি আগেই বিএনপির দাবির প্রতি গুরুত্ব দিত, তাহলে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে এই সিদ্ধান্ত নিতে হতো না। এ সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হওয়ায় সরকারকে অপ্রত্যাশিত ও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এমন ভুল না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিও পুনর্ব্যক্ত করে ফখরুল বলেন, এ বিষয়ে একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করায় জনমনে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। জনগণের এই ক্ষোভ ও প্রত্যাশার বিষয়ে আন্তরিকভাবে সচেতন হতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।