“মব
তৈরি করে যদি রায় নেওয়া যায়, তবে হাইকোর্টের দরকার কী?”—বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা
চেয়ে দায়ের করা রিট খারিজের পর এমন প্রশ্ন
তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল
১১টা ৪৯ মিনিটে নিজের
ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এ মন্তব্য করেন।
-682ed8e418d4f.png)
এর
আগে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ
রায় চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণে বাধা দিতে চাওয়া রিটটি খারিজ করে দেন। আদালত বলেন, রিটকারির এই রিট করার
এখতিয়ার নেই এবং নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিষয়টি হাইকোর্টে না এসে সংশ্লিষ্ট
ফোরামে উঠানো উচিত ছিল। আদালতের মতে, বিষয়টি যেখানে যাওয়ার কথা ছিল সেখানে না গিয়ে ভুলভাবে
হাইকোর্টে আনা হয়েছে।
এই
আদেশের প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক হোসেনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, এই আদেশের ফলে
মেয়র পদে ইশরাকের শপথ নিতে আর কোনো আইনগত
বাধা নেই। তিনি উল্লেখ করেন, আগামী ২৬ মে’র
মধ্যে শপথ না করালে সেটি
আদালত অবমাননার শামিল হবে।
অন্যদিকে
রিটকারির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে
আপিল বিভাগে যাবেন। ফলে আপাতত ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা উচিত বলে তারা মনে করছেন।
হাইকোর্টে
এই আদেশের দিন সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মাজার গেট, বার কাউন্সিল গেটসহ বিভিন্ন প্রবেশপথে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন
করা হয়, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে।
গত
১৪ মে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা মো. মামুনুর রশিদের পক্ষে আইনজীবী কাজী আকবর আলী হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রিটে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানো এবং
তাঁকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী
ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট
বুধবার (২১ মে) আদেশের
জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছিলেন।
এই
রায়ের প্রেক্ষিতে সারজিস আলমের মন্তব্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, আদালতের বাইরের চাপ বা জনমত গঠনের
মাধ্যমে রায় প্রভাবিত করার প্রবণতা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন তোলে। তাঁর মতে, যদি মব বা জনচাপ
তৈরি করে হাইকোর্টের আদেশে প্রভাব ফেলা সম্ভব হয়, তবে সেই আদালতের অস্তিত্বই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।