বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ দেন এবং আবেদন নিষ্পত্তি করেন।
আদালত বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি শক্তিশালী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। নির্বাচন কমিশন কেন মন্ত্রণালয়ের মুখাপেক্ষী হবে? শপথের বিষয়ে ইসি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রাখে, অথচ কেন তারা মন্ত্রণালয়ের মতামতের জন্য পাঠাবে? নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব সম্পাদনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন।
আদালতে ইসির পক্ষে শুনানি করেন ড. মো. ইয়াছিন খান। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন। ইশরাকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এর আগে, বুধবার (২৮ মে) ইশরাককে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট জারি সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য শোনার জন্য আদালত দিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল শুনানির কথাও বলেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপিল বেঞ্চ।
মঙ্গলবার (২৭ মে) ইশরাককে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন চেম্বার আদালত। রিটকারী ছিলেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা।
এর আগেও, ২২ মে হাইকোর্ট সরাসরি রিট খারিজ করে জানায় যে, রিট আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। ওইদিন আদালতে ইশরাকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ইশরাক হোসেন পৌনে দুই লাখ ভোটে হারেন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে। তবে গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ২০২০ সালের নির্বাচনে তাপসের বিজয় বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়।
২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন ইশরাককে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে।
অন্যদিকে, ডিএসসিসির বেশ কিছু কর্মচারী ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার দাবিতে নগর ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই মূল ফটক আটকিয়ে বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন।