প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখতে না পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর বনানীর হোটেল ‘শেরাটন ঢাকা’য় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি চোখে পড়ছে না। এজন্য আমরা উদ্বিগ্ন।”
সংবাদ সম্মেলনটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সর্বসম্মত রায়ের মাধ্যমে দলটির নিবন্ধন পুনঃপ্রাপ্তির প্রেক্ষাপটে আয়োজন করা হয়।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “প্রবাসীরা নতুন বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছেন। অথচ তাদের নেই এনআইডি, নেই ভোটার তালিকায় নাম। এটা দুঃসহ কিছু নয়, শুধু সদিচ্ছার বিষয়। এক কোটি দশ লাখ প্রবাসী ভোটারকে অবজ্ঞা করে বাংলাদেশ এগোতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, “মুখে তাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলা হয়, অথচ তাদের নাগরিক অধিকার দেওয়া হয় না—এটা এক নির্মম উপহাস। আমরা এর পরিসমাপ্তি দেখতে চাই।”
সংবিধান, সমাজ ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে জামায়াতের অবস্থান স্পষ্ট করে দলটির আমির বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও সার্বভৌমত্বের ওপর কারও আধিপত্য মেনে নেব না। তবে বিশ্ব সভায় বাংলাদেশ একটি সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। সম্মান দিয়ে সম্মান আদায় করতে চাই।”
নিবন্ধন বাতিল নিয়ে নিজের বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমাদের প্রতীক ভোজসভায় খেয়ে ফেলা হয়েছিল। সেটা বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত ছিল। এখন আমরা আদালতের রায়ের মাধ্যমে আমাদের অধিকার ফিরে পাচ্ছি। আশা করি বর্তমান নির্বাচন কমিশন তাদের চেয়ারের মর্যাদা রক্ষা করবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো ফেভার চাই না, আবার বৈরিতা বা অবিচারও চাই না। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, তারা যেন নিরপেক্ষতা ও বিশ্বস্ততার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করেন।”
যুব সমাজ প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, “আমরা দুর্নীতি ও দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ চাই। যুবকদের দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
নির্বাচনকাল নিয়ে প্রশ্নে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা সময়ের চেয়ে কাঠামোগত সংস্কারকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের দেওয়া ৪১টি সুপারিশের মধ্যে পাঁচটি মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। জুলাইয়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ খুলে যাবে।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু ভোটার তালিকা অপরিহার্য। ভুয়া ভোটার ছেঁটে ন্যায্য ভোটার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।