ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বৈঠকে দলটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরে ঢাকায় চীনা দূতাবাসে আয়োজিত এই বৈঠকে অংশ নেয় এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্ব দেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। দূতাবাসের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এনসিপি থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়,নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে, “জাতীয় নাগরিক পার্টি বিশ্বাস করে, একটি টেকসই গণতন্ত্র কেবলমাত্র জনআকাঙ্ক্ষা ও কাঠামোগত সংস্কারের ভিত্তিতেই সম্ভব। তাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন ও প্রকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু নীতিগত দলিল নয়, বরং আন্দোলনে শহীদদের প্রতি নৈতিক দায়বদ্ধতার প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, এই সনদ নির্বাচন সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি গড়ে তুলবে, যা ভবিষ্যতের জন্য একটি রূপরেখা হবে।
নির্বাচন কমিশনের কাঠামোগত সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠন ছাড়া জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। একইসঙ্গে তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং পরবর্তী পর্যায়ে গণপরিষদ ও আইনসভা নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান।
চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এনসিপির এই রাষ্ট্রভিত্তিক ভাবনাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান এবং চিন্তাশীল অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি চীনের ‘অ-হস্তক্ষেপ’ নীতির কথা পুনরুল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীন সবসময় সহযোগী থাকবে।”
রাষ্ট্রদূত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গঠনমূলক সংলাপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে তরুণদের ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম ও যুগ্ম সদস্য সচিব তাহসীন রিয়াজ। উভয় পক্ষই সম্মানজনক সংলাপ, পারস্পরিক বোঝাপড়া ও কৌশলগত সহযোগিতার ভিত্তিতে গণতন্ত্র ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠক শেষে এনসিপি চীনা দূতাবাসের উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।