বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন থেকে জনগণকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, একটি দেশের গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো নির্বাচন, আর সেই নির্বাচনকেই সরকার আজ প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
রোববার (৮ জুন) রাজধানীতে জাতীয়তাবাদী ভ্যান শ্রমিক ও রিকশা শ্রমিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত ঈদের খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, “নির্বাচন নিয়ে আজ টানাপড়েন চলছে। কেন চলছে? কার প্ররোচনায় চলছে?—এই প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। সরকার গণতন্ত্রের নাম মাত্র একটি কাঠামো রেখে বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।”
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, “জাপানে গিয়ে তিনি বলে এসেছেন—একটি দল ছাড়া কেউ নির্বাচন চায় না। আমি জানতে চাই, তিনি কি জানেন না সেই দলের জনসমর্থন কতটুকু? একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি কীভাবে এমন মন্তব্য করতে পারেন? অথচ এখন দেখুন, কত রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরেই নির্বাচন চাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র মানে শুধু একটি শব্দ নয়—এটি একটি প্রক্রিয়া। আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে রাজনৈতিক মতবিরোধ রাখতে পারি, তবে যার পক্ষে অধিকাংশ মানুষ ভোট দেবে, তিনিই নির্বাচনে জয়ী হবেন—এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আর এই জন্যই আমরা আন্দোলন করেছি, সংগ্রাম করেছি।”
বিগত সরকারের সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর চালানো নিপীড়নের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী গুম হয়েছেন, কেউ ফিরে আসেননি। তাদের অপরাধ ছিল তারা গণতন্ত্র চেয়েছিল, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিল, কথা বলার অধিকার চেয়েছিল। আর সে কারণেই শেখ হাসিনা তাদের গুম করিয়েছেন। বিচারবহির্ভূত হত্যায় বহু যুবক প্রাণ হারিয়েছে—তাদের লাশ নদীর ধারে, খালের পাশে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। মিথ্যা মামলায় বহু মানুষ বছরের পর বছর জেল খেটেছে।”
তিনি বলেন, “এই সবকিছুর মূলে রয়েছে গণতন্ত্র। আর গণতন্ত্রের প্রধান উপাদান হলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে আজ সেই গণতন্ত্রই বিপন্ন। আজ গণতন্ত্র নিজেই এক দুর্ভাগ্যের শিকার।”
ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, “যারা আন্দোলনে গুম-খুন হয়েছেন, তারাও কিন্তু ড. ইউনূসকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু কীসের সুতা টেনে, কার পরামর্শে তিনি নির্বাচন নিয়ে এমন বিভ্রান্তি তৈরি করছেন? এটা কোনো স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়। আমরা সব কিছু না বুঝলেও, এটুকু বুঝি—এই টানাপড়েন উদ্দেশ্যমূলক।"