× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মামুনুল হক হঠাৎ আফগানিস্তানে

ডেস্ক রিপোর্ট।

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৭ এএম

ছবি: সংগৃহীত।

আচমকা আফগানিস্তান সফরে গিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তার সঙ্গে রয়েছেন আরও ছয়জন আলেম। সফরটি শুরু হয়েছে গত বুধবার সকালে। তারা সরাসরি কাবুল পৌঁছান। তবে সফরটি ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে সময় ও উদ্দেশ্য নিয়ে।

যদিও দলটি দাবি করছে, এটি কোনো দলীয় সফর নয়। খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার, অর্থাৎ ‘ইমারাতে ইসলামিয়া’র আমন্ত্রণে প্রতিনিধি দলটি সে দেশে গিয়েছে। কাবুলে তারা তালেবান সরকারের প্রধান বিচারপতি, একাধিক মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মতবিনিময় করবেন বলে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশেষভাবে তালেবান সরকারের অধীনে মানবাধিকার ও নারী অধিকারের বাস্তবচিত্র সরেজমিনে দেখবেন সফরকারীরা। এই বিষয়গুলো নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনার প্রেক্ষাপটে এই পরিদর্শনের গুরুত্ব রয়েছে বলে দাবি দলটির।

তবে ঠিক কী কারণে মামুনুল হক এ সফরে অংশ নিচ্ছেন—এমন প্রশ্নে দলের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ জানান, নারীর অধিকার হরণ বা লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা, তা স্বচক্ষে দেখার জন্যই তারা গিয়েছেন। কারণ অনেক সময় বিভ্রান্তিকর ধারণা তৈরি হয়। একটি শ্রেণি নারীর অধিকার প্রশ্নে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার করে। সেই বাস্তবতা দেখতে গিয়েছেন তারা।

এই সফরের সময়টা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কারণ, মামুনুল হক যখন কাবুল সফরে রয়েছেন, তখন ঢাকায় তার দল খেলাফত মজলিসের ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে। দলটি ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে। আগামীকাল সব বিভাগীয় শহরেও কর্মসূচি রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ অবাক হয়েছেন। তাদের ভাষায়, এর আগে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার আফগানিস্তান সফরের নজির নেই। এ সফর তাই নজিরবিহীন এবং কিছুটা রহস্যজনকও।

তবে মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ সফরটিকে একান্তই ‘ওলামা সমাজের উদ্যোগ’ বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, এটি কোনো রাজনৈতিক সফর নয়। সঙ্গে থাকা সদস্যদের অনেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এর আগে ২০০১ সালেও ওলামা সমাজ তালেবান শাসিত আফগানিস্তান সফর করেছিল।

জানা গেছে, এবারের সফর দলের পক্ষ থেকে পরিকল্পিতভাবে নয়, ওলামা সমাজের এক ধরনের সম্পর্ক গঠনের অংশ হিসেবেই হয়েছে। মামুনুল হক ছাড়াও প্রতিনিধিদলে রয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল হামিদ (মধুপুরের পীর), মাওলানা আব্দুল আউয়াল, ময়মনসিংহ বড় মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল হক, বারিধারা মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, জমিয়তের নেতা মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী ও ময়মনসিংহের মাওলানা মাহবুবুর রহমান।

এই সফরকারীরা ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে যান। সেখান থেকে দুবাই হয়ে বুধবার সকালে কাবুলে পৌঁছান তারা। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সফরের অংশ হিসেবে তারা আরও কয়েকটি মধ্যএশীয় দেশ সফর করবেন।

তবে এই সফরের উদ্দেশ্য নিয়েই মূল বিতর্ক। তালেবান শাসনের বাস্তবতা দেখতে চাওয়ার কথা বলা হলেও, বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের আমির, যিনি অতীতে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন, তার এই সফরকে শুধু ধর্মীয় বা ব্যক্তি উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন না সবাই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তালেবান সরকার এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি (রাশিয়া ছাড়া)। এমন এক সময়ে তালেবানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা এবং সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা রাজনৈতিকভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করছেন, এই সফরের মাধ্যমে ইসলামী শাসনের একটি 'মডেল' সম্পর্কে ধারণা নিতে চাইছে দলটি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শরিয়াপন্থী রাষ্ট্রব্যবস্থার ধারণা বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও, একটি শ্রেণি তালেবানি মডেল বিষয়ে আগ্রহী। এ সফর হয়তো সেই আগ্রহ থেকেই।

তবে এমন ধারণা উড়িয়ে দিয়েছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইসলামি সরকার নেই, তাই শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নের প্রশ্নও ওঠে না। আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা। কারও পক্ষে তা হুবহু অনুকরণ বা প্রয়োগ সম্ভব না।

তবে সফরের বিষয়ে দলীয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি কেন দেওয়া হলো—এই প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, মামুনুল হকের দুটি পরিচয় আছে, তিনি একজন আলেম, আবার রাজনৈতিক দলের প্রধান। সেই হিসেবে অফিস থেকে সংবাদটি সবাইকে জানানো হয়েছে। 

সূত্র: বিবিসি

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.