× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

এনসিপির প্রার্থী তালিকায় থাকছেন অন্য দলের সাবেক এমপি ও মনোনয়নবঞ্চিতরা!

ডেস্ক রিপোর্ট।

০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৪৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে গতি এনেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছে এবং দেশজুড়ে সম্ভাব্য প্রার্থী যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু করেছে। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়মিতভাবে নেওয়া হচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি থাকলেও এনসিপি এককভাবে না কি জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে, তা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

চলতি মাসেই দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলীয় নেতাদের পাশাপাশি সাবেক এমপি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়নবঞ্চিত নেতা, তরুণ ও জনপ্রিয় ব্যক্তি, ব্যবসায়ী এবং এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। তবে বিগত তিন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়ার পক্ষেই দলটির বেশিরভাগ নেতা।

গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে এনসিপির মনোনয়ন ফরম বিক্রি। আগামী ১৩ নভেম্বরের মধ্যেই আগ্রহীদের আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। এরপর ১৫ নভেম্বর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। এনসিপি সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে ১০০ থেকে ১৫০টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। তবে দলটি ৩০০ আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচনে এনসিপি এককভাবে না কি জোটগতভাবে বা সমঝোতার ভিত্তিতে অংশ নেবে, তা নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে চলছে আলোচনা। দলের অধিকাংশ নেতা একক নির্বাচনের পক্ষে মত দিলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপি কিংবা জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতার দিকে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

মনোনয়ন ফরম বিক্রির বিষয়ে এনসিপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সাইফুল্লাহ হায়দার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৬৫-৭০টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ে বাইরের শুভাকাঙ্ক্ষী ও নেতাকর্মীরা মনোনয়ন ফরম বেশি কিনছেন। নির্ধারিত ১০ হাজার টাকার বেশি দিয়েও ফরম কিনছেন কেউ কেউ। সমাজের সব ধরনের মানুষের জন্য আমরা মনোনয়ন ফরম উন্মুক্ত রেখেছি। আশা করি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আগ্রহী সবাই কিনবেন।’

দলীয় সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলের যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের পাশাপাশি জিতে আসার মতো সক্ষমতা থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপি এবং জামায়াতের মনোনয়নবঞ্চিত জনপ্রিয় নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দিকেই নজর এনসিপির। প্রায় প্রতিদিনই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং অনেকে আগ্রহও প্রকাশ করছেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। এ ছাড়া এমন নেতাদের অনেকে নিজে থেকেও এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলেও দলটির নেতারা জানিয়েছেন।

এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, যারা বিভিন্ন দলে মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছে এবং নির্বাচন করতে চায় তাদের সঙ্গে দলের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিএনপির তরুণ নেতৃত্ব ও সাবেক সংসদ সদস্য, যাদের নির্বাচনী আসনে প্রভাব রয়েছে, তাদের টানার চেষ্টা বেশি। অন্যান্য দলের জনপ্রিয় নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ হচ্ছে। এ ছাড়া বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের খোঁজা হচ্ছে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় এক নেতাও একই তথ্য দেন। তিনি জানান, বিএনপির মনোনয়নে তরুণদের খুব বেশি জায়গা দেওয়া হয়নি। ছাত্রদলের সাবেক জনপ্রিয় অনেক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এনসিপির নেতারা। তাদের কেউ কেউ তাদের হয়ে প্রার্থী হতেও পারেন।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘মনোনয়নের ক্ষেত্রে আমরা তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিচ্ছি। জিতে আসার মতো সক্ষমতা, ভালো ইমেজ এবং সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক সক্ষমতা। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি প্রাথমিক বাছাই করবে, তারপর দলের আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ড গঠন করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দলের মনোনয়নবঞ্চিতদের জন্যও আমরা সুযোগ রাখছি। যাদের গ্রহণযোগ্যতা ভালো, রাজনৈতিক ক্যালিবার আছে, এলাকায় জনপ্রিয়—এমন আগ্রহীদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি, এমন অনেকেই আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে। শুধু তরুণরা সবার জন্যই উন্মুক্ত থাকবে।’

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করব। প্রথম ধাপে হয়তো ১০০টির মতো আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। সবার জন্য আমরা উন্মুক্ত রেখেছি। তবে বিগত তিন নির্বাচনে, বিশেষত ২০২৪ সালের আমি-ডামি নির্বাচনে অংশ নেওয়া কাউকে আমরা মনোনয়ন দেব না। আওয়ামী লীগ কিংবা জাতীয় পার্টি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমাদের জিরো টলারেন্স রয়েছে। অন্যান্য দলে মনোনয়ন চেয়েছে কিন্তু পায়নি—এমন কেউ যদি আগ্রহ প্রকাশ করে এবং আমাদের ক্রাইটারিয়ার সঙ্গে একমত হয়, তাহলে তাদের জন্যও সুযোগ রাখা হয়েছে।’

শুক্রবার রাজধানীর বাংলামটরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এনসিপির সাধারণ সভায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলের কৌশল, সম্ভাব্য জোট-সমঝোতা এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রচার-প্রচারণা নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ সদস্য এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে মত দেন। তাদের মতে, এনসিপির নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান ও স্বতন্ত্র পরিচিতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণই সবচেয়ে কার্যকর পথ। তবে বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে এনসিপি জোটে যাবে কি না, কিংবা গণতন্ত্র মঞ্চের ছয় দল, এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদকে নিয়ে সম্ভাব্য ‘তৃতীয় জোটের’ অংশ হবে কি না, তা নিয়েও আলোচনা রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

এক নেতা বলেন, দলের অধিকাংশ সদস্য এককভাবে ‘শাপলা কলি’ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে। তবে এককভাবে প্রার্থী ঘোষণা হলেও নির্বাচনের আগে বিএনপি কিংবা জামায়াত কারও সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলামটরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে এনসিপি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী যদি সংস্কার প্রক্রিয়ায় এক জায়গায় আসে এবং তারা যদি ভবিষ্যতে সংস্কারকাজ বাস্তবায়ন করবে—এমন প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে বিএনপি ও জামায়াত যে কারও সঙ্গে আমাদের জোট হতে পারে।’

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.