বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে ভিলেন চরিত্র একসময় গল্পের গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হলেও বর্তমান সময়ে সেই জায়গায় শূন্যতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন অভিনেতা ডন মাহমুদ। তার মতে, এখন বাংলাদেশি সিনেমায় প্রকৃত অর্থে শক্তিশালী খল অভিনেতা খুব একটা নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে খল অভিনেতা নাই বললেই চলে। একমাত্র মিশা সওদাগর ভাই ও রাশেদ মামুন অপুই নিয়মিতভাবে এই জায়গাটা ধরে রেখেছেন।”
সময় বদলেছে, বদলেছে দর্শকের রুচিও। এখন দর্শক চায় শক্তিশালী চরিত্র, যাদের উপস্থিতিতেই পর্দা কাঁপে। সেই পরিবর্তনের ঢেউয়েই ডন মাহমুদ নিজেকে প্রস্তুত করছেন ভিন্ন মাত্রার ভিলেন হিসেবে। শারীরিক গঠন, চোখের ভাষা, সংলাপ বলার ভঙ্গি আর দাপুটে স্ক্রিন প্রেজেন্স—সব মিলিয়ে তাকে অনেকেই নতুন প্রজন্মের “পাওয়ারফুল ভিলেন” হিসেবে দেখছেন। তার অভিনয়ে তামিল সিনেমার ভিলেনদের মতো তীব্রতা থাকলেও, সেটি অনুকরণ নয়; বরং গল্প ও চরিত্রে রয়েছে বাংলাদেশি বাস্তবতার ছাপ।
ডন মাহমুদের ভাষায়, তিনি শুধু মারদাঙ্গা খলনায়ক হতে চান না; বরং এমন চরিত্রে কাজ করতে আগ্রহী, যেখানে থাকবে আবেগ, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও মানসিক গভীরতা। “আমি চাই দর্শক আমাকে ভয় পাক, আবার চরিত্রটাকে বিশ্বাসও করুক,”—বলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি চান বাংলাদেশি সিনেমা যেন বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যায় এবং আন্তর্জাতিক দর্শকের কাছেও পৌঁছাতে পারে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি নিজেকে বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিশ্বমুখী যাত্রার একজন সহযোগী হিসেবে দেখতে চান।
ডন মাহমুদের ক্যারিয়ারে ইতোমধ্যেই রয়েছে বরবাদ, তুফান, ডার্ক ওয়ার্ল্ড ও ময়নার চর–এর মতো সিনেমা। বর্তমানে তিনি আলোচনায় রয়েছেন শাকিব খানের আসন্ন ও বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা “প্রিন্স”–এ অভিনয়ের কারণে। এই সিনেমায় তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবেন বলে জানিয়েছেন, যা তার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে, নায়ককেন্দ্রিক গল্পের বাইরে গিয়ে ভিলেনকে গুরুত্ব দেওয়ার যে নতুন ধারা বাংলাদেশি সিনেমায় গড়ে উঠছে, সেখানে ডন মাহমুদ হতে পারেন বড় চমক। এখন দেখার অপেক্ষা—প্রেক্ষাগৃহের আলো নিভলে পর্দা কতটা কাঁপে, আর দর্শক কতটা মনে রাখে এই নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি ভিলেনকে।