প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে জীবন পাল্টে গেছে ঝালকাঠির একমাত্র নারী নরসুন্দর শেফালী রানীর জীবন। ২০ বছর ধরে শেফালী রানী ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের বলতলা গ্রামের দোগনা বাজারে নরসুন্দরের কাজ করছেন। অভাব অনটনের সংসারে এ কাজ করেই তিনি ৫ ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন।
বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে শেফালী রানীকে ৫ শতাংশ জমিসহ একটি ওয়াল টিনশেড পাকা বাড়ী নির্মান করে দেয়া হয়। এর আগে বাঁশের বেড়া দেয়া একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকতেন সংগ্রামী এই নারী। তবে এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে শেফালী রানীর । তার একটি ডিপ টিউবওয়েল ও বাজারে একটি দোকান ঘর হলে তিনি স্বাচ্ছন্দেই জীবন কাটাতে পারেন। উপজেলা প্রশাসন বলছে, শিগ্রই শেফালী রানীকে একটি ডিপ টিউবওয়েল ও দোগনা বাজারে একটি স্থায়ী দোকান ঘর নির্মান করে দেয়া হবে।এক সময়ে স্বামী সংসার সবই ছিলো শেফালী রানীর। স্বামী নরসুন্দরের কাজ করতেন।
হঠাৎ স্বামী পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যান। এরপরেই সংসারের হাল ধরেন শেফালী রানী। অদম্য সাহস নিয়ে শুরু করেন নরসুন্দরের কাজ। ২০ বছর যাবৎ তিনি এ কাজ করে যাচ্ছেন। তিনিই সম্ভবত দেশের একমাত্র নারী নরসুন্দর। কাঠালিয়া উপজেলার দোগোনা বাজরে রাস্তার পাশে চেয়ার দিয়ে ও নিজ বাড়ীতে কাজ করেন শেফালী রানী। শেফালী রানীর কোন নিজস্ব জমি না থাকায় বাঁশের বেড়া দেয়া একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকতেন তিনি।
২০১৯ সালে বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রীর। এরপরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান প্রতিমন্ত্রী ডা: এনামুর রহমান শেফালী রানীর বাড়ীতে আসেন।প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে তাকে ব্যবস্থা করে দেন বলতলা গ্রামে ৫ শতাংশ জমির। সেখানেই নির্মিত হয় ৫ ছেলে মেয়ে নিয়ে থাকারমত একটি ওয়াল টিনশেড বাড়ী। এই বাড়ী পেয়ে খুশি শেফালী রানী। কখনও কল্পনাও করেননি পাকা বাড়ীতে থাকার। এরপরে শেফালী রানী ঢাকায় গিয়ে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রীর সাথে। সংগ্রামী এই নারীকে জড়িয়ে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেফালী রানীর ৫ ছেলে মেয়ে সকলেই স্কুল ও কলেজে লেখা পড়া করছেন। আর স্বামী প্রায় ১৫ বছর হলো নিরুদ্দেশ রয়েছেন। বড় মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন।
শেফালী রানীকে জমিসহ পাকা ঘর তুলে দেয়ায় স্থানীয়রাও কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রীকে। শেফালী রানী জানালেন, নিজস্ব জমি ও পাকা ঘর পেয়ে তিনি খুবই খুশি। এখন তার একটি ডিপ টিউবয়েল এবং বাজারে একটি দোকান ঘর দরকার। কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার জানালেন, শেফালী রানীকে দোগোনা বাজারে শীঘ্রই একটি দোকানঘর নির্মান করে দেয়া হবে এবং তাকে ডিপটিউবওয়েলের ব্যবস্থাও করে দেয়া হবে।