× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মুসলিম ধর্ম প্রচারক হযরত খানজাহান আলী

কামরুজ্জামান শিমুল, বাগেরহাট

৩০ অক্টোবর ২০২২, ০৮:২৫ এএম

হযরত খানজাহান আলী (রহ:) একজন মুসলিম ধর্ম প্রচারক, সুফি ও আউলিয়া ছিলেন। ১৩৬৯ সালে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন এই মহান সাধক। ইসলামের সমস্ত বৈরী শক্তির মোকাবেলায় ঝড়ের বেগে অগ্রসর হয়ে  যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছেন, ইসলামের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং জনহিতকর কার্যে সারাজীবন অতিবাহিত করেছিলেন এই খানজাহান আলী (রহ:)। খান জাহান আলী নামে পরিচিত হলেও তার আসল নাম শের খান, কিশওয়ার বা কেশর খান। তিনি উলুঘ খান কিংবা খান-ই-আজম নামেও বেশ পরিচিত। 

ইসলাম প্রচার, ইসলামী ভাবধারার প্রচলন ও ইসলামী সমাজবিধি প্রচলনে তিনি ছিলেন অন্যতম পথিক। তিনি নিজে ইসলাম প্রচার করার সাথে সাথে বিভিন্ন শিষ্য-সাগরিদদেরকে বিভিন্ন স্থানে ইসলাম প্রচারের জন্যে প্রেরণ করতেন। তার সংগঠন ক্ষমতা, জনসেবা ও অকৃত্রিম চরিত্র মাধুর্যে বিমোহিত হয়ে অমুসলিম সম্প্রদায়গুলো দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতো।

তার পূর্বপুরুষেরা বাগদাদের অধিবাসী ছিল বলে জানা যায়। হযরত খান জাহান আলী (রহ:) এর পিতার নাম ছিল আজর খান বা ফরিদ খান। মায়ের নাম ছিল আমিনা বিবি। তারা হযরত বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ:) এর বংশধর।

 এ দেশে আগমনের সময় তাঁর সাথে যে ৩৬০জন আউলিয়া এসেছিলেন সম্ভবতঃ তাঁদের সংখ্যার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তিনি ৩৬০টি মসজিদ নির্মাণ ও ৩৬০টি দীঘি খনন করেছিলেন। প্রথমে শাসকরূপে জীবন শুরম্ন করলেও পরবর্তীতে ধর্ম প্রচার ও জনসেবাই ছিল তাঁর প্রধান কাজ। স্থানীয় জনসাধারণের কাছে তিনি ছিলেন এক অলৌকিক ক্ষমতাবান মহাপুরুষ। দুঃস্থ মানুষের মুখে অন্ন, লবণাক্ততা থেকে জলকষ্ট নিবারণের জন্য  অসংখ্য দীঘি খনন, রাস্তাঘাট নির্মাণ, হাট-বাজার স্থাপন ও মানুষের ধর্মীয় উপাসনার জন্য উপাসানালয় নির্মাণ করে প্রকৃত শাসকের পরিচয় দিয়েছেন।

হযরত খান জাহান আলী (রহ:) এর সৃষ্টিকর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বারোবাজার, মুড়লী কসবা, পয়গ্রাম কসবা ও বাগেরহাট নগরী। শেষ সময় ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ, বিবি বেগনী এক গম্বুজ মসজিদ, চুনাখোলা এক গম্বুজ মসজিদ, খান জাহানের বসতবাটী, রণ বিজয়পুর মসজিদ, খান জাহানের মাজার, পীর আলী মুহাম্মদ তাহিরের মাজার, দরগা মসজিদ, নয় গম্বুজ মসজিদ, সিঙ্গাইর মসজিদ, কুড়া মসজিদ, তিন গম্বুজ মসজিদ, বাবুর্চিখানা, খাঞ্জালীর জাঙ্গাল, ঠাকুরদীঘি, ঘোড়াদীঘি সহ অসংখ্য মসজিদ ও দিঘী। বারোবাজারে প্রাচীন সংস্কৃতির চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়। এখানে হযরত খান জাহান আলীর প্রতিষ্ঠিত মসজিদ ও দিঘী রয়েছে। তাছাড়া বারোবাজারে তার অবস্থানকালে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচার হয়েছিল। সেখানে তিনি বেশ কয়েকটি মসজিদ নির্মাণ করেন। যার মধ্যে গোড়া মসজিদ, জোড় বাংলার মসজিদ, চেরাগদানি মসজিদ ও সাতগাছিয়া মসজিদ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

খানজাহান আলী (রহ:) এর প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল সোনা বিবি। কথিত আছে সোনা বিবি ছিলেন খানজাহান আলীর পীর নূর-কুতুবুল আলমের একমাত্র কন্যা। খানজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী রূপা বিবি ওরফে বিবি বেগনী ধর্মান্তরিত মুসলমান ছিলেন। খানজাহান আলী তার দুই স্ত্রীর নাম অনুসারে সোনা মসজিদ এবং বিবি বেগনী মসজিদ নামে মসজিদ নির্মাণ করেন। মাজারশরীফের শিলালিপি অনুযায়ী ৮৬৩ হিজরী ২৬শে জিলহজ্ব, অক্টোবর ২৫, ১৪৫৯ তারিখে হযরত খানজাহান আলী (রঃ) ষাট গম্বুজ মসজিদের দরবার গৃহে এশার নামাজ রত অবস্থায় ৯০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । সম্পাদক: 01703-137775 । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.