ভোলার চরফ্যাশনে অনলাইনে বদলিপ্রক্রিয়া নিয়ে গোলকধাঁধায় পড়েছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। তথ্যপ্রযুক্তিগত জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণেই বদলির নতুন প্রচলিত এই পদ্ধতি নিয়ে রীতিমত বিভ্রান্তিতে আছেন শিক্ষকরা।
এই সুযোগে একটি মহল জেনে বা না জেনেই বদলি নিয়ে ছড়াচ্ছে গুজবের ডালপালা। গুজব আর অপ্রচারের ফলে উপজেলা শিক্ষা অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা আর কর্মচারীরা রীতিমতো বিব্রত ।
উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, চরফ্যাশন উপজেলায় ২শ ১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ১১শ জন। সারাদেশের মতো দীর্ঘদিন বদলী বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি সহকারী শিক্ষকদের দু’ধাপে অনলাইনে বদলীর সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে আবেদনকারী ১শ ৫৭জন শিক্ষকের মধ্যে ১৮ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে আবেদনকারী ২শ ৬০ জনের মধ্যে ৬০জন শিক্ষক প্রত্যাশিত বিদ্যালয়ে বদলীর সুযোগ পেয়েছেন। এই তথ্যানুযায়ী বদলীর জন্য আবেদনকারী ৪শ ১৭জনের মধ্যে বদলীর আদেশ পেয়েছেন মাত্র ৭৮ জন।ফলে বদলী নিয়ে এখানে শিক্ষকদের মধ্যে উাচ্ছ্বাসের চেয়ে হতাশাই বেশী। যার সুযোগ নিয়ে একটি চক্র উপজেলা শিক্ষা অফিসে কর্মরত কর্মকর্তাদের ঘিরে অপ্রচার ছড়াচ্ছে।
দ্বিতীয় ধাপে বদলির আদেশ প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মো. আলী আহাম্মদ জানান, বদলির জন্য আবেদন করেছিলাম। এতো সহজে বদলি হওয়া যায় আগে ভাবতেও পারিনি।
বদলির আদেশপ্রাপ্ত অপর সহকারী শিক্ষক অনুপ কুমার সিংহ জানান, কোন দৌড়ঝাঁপ নেই। কারো কাছে যাওয়ার কোন কাজও নেই। দোকান থেকে আবেদন করলাম। দেন দরবার আর তদ্বির ছাড়াই ঘরে বসেই বদলীর আদেশ পেলাম। সবকিছু স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। এমন ইতিবাচক মন্তব্য বদলীর আদেশপ্রাপ্তদের মুখে শোনা গেলেও বঞ্চিতদের সূর ভিন্ন।
আবেদন করে বদলি হতে পারেননি এমন একাধিক শিক্ষক নামপরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেছেন, আসলে কিভাবে কি হচ্ছে এখনো বুঝতেই পারছি না। আবেদন করেছি, কোন লাভ হয়নি।
শিক্ষক এবং অফিসিয়ালদের একাধিক সূত্র জানায়, সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে বদলী সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারণা। শিক্ষকরা এখনো এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে ম্পষ্ট নয়। ফলে নানান গুজবের মধ্যে বিভ্রান্তিতে আছেন তারা। শিক্ষকরা অধিদপ্তরের নির্দিষ্ট সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে আনলাইনে আবেদন করছেন। অধিদপ্তরের সফ্টওয়্যার থেকেই আবেদনকারীদের মধ্য থেকে নির্বাচিতদের বদলীর আদেশ দেয়া হয়ে থাকে। স্থানীয় প্রশাসন তথা উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিস অধিদপ্তরের আদেশ কার্যকর করে থাকেন,তার বেশী কিছুই নয়। সুবিধাভোগীদের প্রযুক্তিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার সুযোগে কিছু দুস্কৃতিকারী নানান অপপ্রচারের মাধ্যমে বঞ্চিতদের দায় উপজেলা বা জেলা শিক্ষা অফিসের উপর চাপিয়ে সাধারন শিক্ষকদের বিভ্রান্তিতে ফেলছেন।
শিক্ষকদের সূত্র আরো জানায়, গত অর্থবছরে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতের বরাদ্দ থেকে অর্থ লেনদেনের সাজানো অভিযোগ তুলে শিক্ষা কর্মকর্তা আর শিক্ষকদের বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
কর্মরত একাধিক প্রধান শিক্ষক জানান, বদলি চেষ্টায় বঞ্চিতরা বিভ্রান্ত হয়ে এসব অপপ্রচার করেছে,যার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার অহিদুল ইসলাম জানান, বদলি নিয়ে বিপদে আছি। অনলাইনে বদলির ক্ষেত্রে উপজেলা বা জেলা শিক্ষা অফিসের বেশীকিছু করার নেই। কাউকে বিশেষ কোন সুবিধা দেয়া বা না দেয়ার কোন সুযোগ উপজেলা বা জেলা শিক্ষা অফিসের হাতে নেই। তারপরও বিভিন্ন মহল জেনে বা না জেনে উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জড়িয়ে অপপ্রচার করছে। দ্বিতীয় ধাপের বদলি নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন অনলাইন পোর্টন ও স্যোসাল মিডিয়ায় ঢালাও ভাবে চরফ্যাশন উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ঘিরে এমন অপপ্রচার দেখা গেছে। এসব অপপ্রচারে উপজেলা শিক্ষা অফিস রীতিমতো বিব্রত। তবে শিক্ষকরা ধীরে ধীরে বদলির নতুন এই ধারনার সাথে পরিচিত হওয়ার মাধ্যমে এসব বিভ্রান্তি থেকে বের হয়ে আসবেন বলে ওই কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh