× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

হোয়ানক পানিরছড়ার পশ্চিমে ফের প্যারাবন কেটে অবৈধ দখলবাজি

এ.এম হোবাইব সজীব, কক্সবাজার

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:০৫ এএম

সাগরবেষ্টিত মহেশখালী দ্বীপের চারদিকে প্যারাবনের প্রাকৃতিক বেষ্টনী। কিন্তু এ প্যারাবনে যেভাবে বেপরোয়া দখলদারদের থাবা বসেছে এতে বেশিদিন আর রক্ষা করা সম্ভব হবেনা। মহেশখালীর হোয়ানকের পশ্চিমে কালাগাজি পাড়ার বগাচতর ঘোনার লাগোয়া ও বগাচতর অমবশ্য খালীর বেক্সিমকো ঘোনার পশ্চিমে হেতালিয়া ঘোনার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় প্রতিনিয়ত প্যারাবন কেটে বানানো হচ্ছে চিংড়ি ঘের।

উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নে বন বিভাগের কয়েক দফা অভিযানের পরও ২টি মৎস্য প্রকল্প তৈরি করতে থামেনি প্যারাবনের গাছ কাটা। গত জানুয়ারি মাসে ওই এলাকায় প্যারাবনের প্রায় ২৫০ একর জায়গা দখল করে চিংড়িঘেরের জন্য বাঁধ নির্মাণ করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। কাটা হয়েছে প্যারাবনের অন্তত আট হাজার বাইনগাছ। পানিরছড়ার পশ্চিমে বেক্সিমকো ঘোনার দুই পাশেই ছিল বন বিভাগের সৃজিত হাজার হাজার বাইন গাছ ও প্যারাবন।

অভিযোগ উঠেছে উপজেলার হোয়ানকের পশ্চিমে ফের প্যারাবন কেটে অবৈধ দখলবাজিতে এডভোকেট সাহাব উদ্দিন ও বড় মহেশখালীর মারুফের

নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ,জামায়াত  ও বিএনপি একাট্টা হয়েছে। দফায় দফায় বৈঠক করে টাকা নিয়ে চুপ রয়েছে ঝাপুয়া বিট কর্মকর্তা, মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম উপকূলীয় বনবিভাগের কর্মকর্তারা। এই সব বেপরোয়া দখলদারের সিন্ডিকেট দুই নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে খালের দুই পাশে বাঁধ দিয়ে খাল দখল করে লবণের মাঠ ও চিংড়ি ঘের নির্মাণ করেন। সাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বেধীন গড়ে উঠা মৎস্য প্রকল্পে লবণ উৎপাদন হচ্ছে বর্তমানে।

অন্য একটি চিংড়ি ঘের দখলে নেতৃত্বে রয়েছেন কুতুবদিয়ার এরশাদ,জনপ্রতিনিধি ও কালাগাজী পাড়ার প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতারা।

জানাগেছে, অমাবশ্যাঘোনা ও বেক্সিমকো ঘোনা এলাকায় প্যারাবন দখলের এ ঘটনায় ইতোমধ্যে আদালতে দুটি এবং মহেশখালী থানায় একটি মামলা করেছে চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগ। 

কিন্তু মামলাতেও থেমে নেই দখলের মহোৎসব। দখলদাররা মামলার আগাম জামিন নিয়ে ফের নেমে পড়েন প্যারাবন দখলে। জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার হোয়ানকের কালাগাজী পাড়ায় বন বিভাগের লোকজনকে ম্যানেজ করে বগাচতর ঘোনার লাগোয়া সরকারি প্যারবনের শতশত বাইন গাছ কেটে স্ক্রেবেটার দিয়ে প্রায় বনের জায়গা দখল করে চিংড়ী ঘের নির্মাণ করে আসছে ওই সিন্ডিকেটটি। 

আবার মহেশখালী উপকূলীয় বন কর্মকর্তাদের নাটকীয় অভিযানেও টনক নাড়তে পারেনি দখলদারদের। বন বিভাগের দেওয়া মামলাতেও গ্রেফতার হয়নি কেউ।

স্থানীয়দের অভিযোগ

নদী দখল ও বন ধ্বংসের সঙ্গে জড়িতদের তালিকায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা এমনকি জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট দফতর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করেই দিনে-দুপুরে চলছে এসব দখল, বন ধ্বংস এবং ঘের নির্মাণ কার্যক্রম। তাদের মতে, প্রশাসনের সায় না থাকলে প্রকাশ্য দিবালোকে এ ধরনের কাজের সাহস পেত না কেউ। 

পরিবেশক আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, নির্বিচারে গাছ কাটার কারণে এ উপকূলীয় এলাকার সবুজ বেষ্টনী ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধিদের সমর্থন ও অংশগ্রহণ ছাড়া এত বিপুল অর্থের কারবার অসম্ভব। ভূমিদস্যুরা প্রথমে শ্রমিক দিয়ে প্যারাবন নিধন করে। পরে খননযন্ত্র দিয়ে ওই সরকারি বনভূমি দখল করে অবৈধভাবে চিংড়িঘেরের বাঁধ তৈরি করে।

এবারের জলবায়ু সম্মেলনে বন রক্ষায় বাংলাদেশ যে সম্মতি দিয়েছে, তার মুখ রক্ষা করতে পারবে কি সরকার? আমরা দেখতে চাই পরিবেশ অধিদপ্তর, ভূমি অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেয়। 

পরিবেশবাদী নেতারা বলেন, তদন্ত কমিটি গঠন করে আইন লঙ্ঘন করে নির্বিচারে এতগুলো গাছ কেটে ফেলায় জড়িত অসাধু চক্রের সবাইকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। মহেশখালীতে নির্বিচারে প্যারাবন কাটা, পাখির আবাসস্থল ধ্বংস ও নদী ভরাট করে ঘের নির্মাণ এবং দেশের অন্যান্য স্থানে এ রকম অবৈধ বৃক্ষনিধন ও নদী দখল রোধ করতে না পারার দায়িত্ব সরকার ও প্রশাসনকেই নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্সের নীতি গ্রহণ করতে হবে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না।

ঝাপুয়া বিট কর্মকর্তা মাহাবুব জানান, কালাগাজী পাড়া- বগাচতরের লাগোয়া সরকারি প্যারাবনের বেশ কিছু গাছ কেটে চিংড়ি ঘের করার জন্য বাঁধ দেওয়া হয়েছে। তা আমরা কেটে দিয়েছি।  এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। প্রাথমিক  ভাবে পৃথক ২ চিংড়ি প্রকল্পে নির্মাণে স্থানীয় সাহাব উদ্দিন ও কুতুবদিয়ার এরশাদের নেতৃত্বে প্যারাবনের গাছ কাটার তথ্য পেয়েছি। আমরা আবারও অভিযান পরিচালনা করব। 

গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান  জানান, ওই জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের চিংড়ী ঘের নির্মাণ করার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অনেক আগে থেকে। চিংড়ি ঘের নিমার্ণের ব্যাপারে খবর পেলে অভিযান।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন কর্মকর্তা আব্দু রহমান বলেন, প্যারাবন রক্ষায় আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। 

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.