প্রতিটি গ্রামে বিশেষ করে গৃহস্থ পরিবারগুলো প্রচুর আটিয়া কলা চাষ করতেন। অনেকে আবার রাস্তার ধারে এমনিতেই লাগিয়ে রাখতেন। এই কলার চাহিদাও ছিল প্রচুর। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরুর পর থেকে ধীরে ধীরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য আটিয়া কলা বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে।
সরেজমিনে, উপজেলার রায়পুর, রামগতি, রামগঞ্জ, কমলনগর, লক্ষ্মীপুর সদরে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে কোথাও কোথাও রাস্তার ধারে কিছু আটিয়া কলা গাছ দেখা গেলেও গৃহস্থ বাড়িগুলোতে তেমন একটা চোখে পরেনি। লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উৎপাদিত আটিয়া কলা বিখ্যাত ছিল। আধুনিকতায় সেই ঐতিহ্যও হারাতে বসেছে।
রায়পুর চরপাতা এবং চর রুহিতা ইউনিয়নের রসুলগঞ্জ গ্রামের কৃষক আবদুল মতিন জানান, আগের দিনে জমি চাষ করতে যাওয়ার আগে পানতা ভাত, চিড়া বা মুড়ি দিয়ে কালেমজিরা আটিয়া কলা মেখে খেয়ে মাঠে যেতাম। এখন আর গরু মহিষের হালও নেই, আটিয়া কলা দিয়ে পানতা ভাত বা চিড়া মুড়ি খাওয়াও নেই। তবে বাড়িতে কখনো কোন ধরনের তরকারিতে- যেমন অনেকটা 'কাঁচা কলা' ব্যবহার করেন আম্মা- চাচিরা নিরামিষ বা অন্যকিছুতে, তেমন কোন অভিজ্ঞতার কথা মনে করতে পারছি না। মনে হয়, মাত্রাতিরিক্ত বিচি-ই এক্ষেত্রে মূল ঋণাত্মক প্রভাবক হিসেবে কাজ করে থাকে।
আসলে এটা শুধু একটা কলা নয়। কিছু ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত অঞ্চলসমূহের প্রবীণ মানুষদের একটা আবেগ ও ভালোবাসার নাম। জেলা থেকে প্রায় ৮ জাতের আটিয়া কলা হারিয়ে যাচ্ছে। যেনন কালেমজিরা কলা, বউ কলা, মাটিয়া কলা, বেদোনা কলা, সুন্দরী কলা,সূর্য চেংগা কলা , ধুন্দুল কলা, পাকুনদিয়া কলা আরো নাম না জানা অনেক জাতের আটিয়া কলা এখন আর তেমন চোখে পড়ে না।
এক সময় গ্রামের মানুষ আটিয়া কলা, দুধ, দই, চিড়া ও মুড়ি দিয়ে সকালের নাস্তা করতো। কালের বিবর্তনে এসব দেশীয় খাবারের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে ‘আটিয়া কলা’।
দেশি আটিয়া কলা মোটা ও লম্বা হয়। এ কলায় অনেক ভিটামিন ও প্রোটিন রয়েছে। গ্রামে এখনো প্রচলিত আছে, আটিয়া কলা ও চিড়া খেলে পাতলা পায়খানা কমে যায়।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৭নং বশিক পুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের ৬৫ বছরের বয়সের বৃদ্ধ বাদশা মিয়া ও নুরুল আলম সাহাআলম সংবাদ সারাবেলা কে বলেন, দেশি আটিয়া কলা এক সময়ের জনপ্রিয় খাবার ছিল। আমি ছোট থেকে দেখে এসেছি আমার বাবা প্রতিদিন সকালে দেশি আটিয়া কলা, দুধ, চিড়া দিয়ে নাস্তা করতেন। আমার বাবা আমাকে বলেছিলেন, যদি কারো পাতলা পায়খানা হয় তাহলে দেশি আটিয়া কলা আর দুধ, চিড়া খেলে ভাল হয়ে যায়।
কলা ব্যবসায়ী জেহাদি বলেন, দেশি আটিয়া কলা এখন খুবই কম পাওয়া যায়। কিছু কিছু গ্রামে আটিয়া কলা পাওয়া যায়। তবে আগে অনেক পাওয়া যেত এখন তা কমে এসেছে। তবে এখনো কিছু কিছু গ্রামের মানুষ এই কলা খোঁজ করে।একটি বড় মাপের কলা খেলে ১০০ ক্যালরির বেশি শক্তি পাওয়া যায়। কলাতে রয়েছে সহজে হজমযোগ্য শর্করা। শর্করা পরিপাকতন্ত্রকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে।
গবেষক সানাউল্লাহ সানু জানান, আটিয়া কলা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করে। এ কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে।
দেশি আটিয়া কলা মোটা ও লম্বা হয়। এ কলায় অনেক ভিটামিন ও প্রোটিন রয়েছে। গ্রামে এখনো প্রচলিত আছে, আটিয়া কলা ও চিড়া খেলে পাতলা পায়খানা কমে যায়।
আমি ছোট থেকে দেখে এসেছি আমার বাবা প্রতিদিন সকালে দেশি আটিয়া কলা, দুধ, চিড়া দিয়ে নাস্তা করতেন। আমার বাবা আমাকে বলেছিলেন, যদি কারো পাতলা পায়খানা হয় তাহলে দেশি আটিয়া কলা আর দুধ, চিড়া খেলে ভাল হয়ে যায়।
লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, একটি বড় মাপের কলা খেলে ১০০ ক্যালরির বেশি শক্তি পাওয়া যায়। কলাতে রয়েছে সহজে হজমযোগ্য শর্করা। শর্করা পরিপাকতন্ত্রকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কৃষি উপ-পরিচালক ডা. জাকির হোসেন জানান, এ কলার বিচি বেশি হওয়ার কারণে কেউ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে না। তবে গ্রামের বাড়ির আশপাশে এ কলার গাছ দেখা যায়। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করলে আটিয়া কলা টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh