× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

হুমায়ুন আজাদ হত্যা

ঘাতকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অপেক্ষায় স্বজনরা

হালিম মোহাম্মদ

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:৫২ পিএম

লেখক ও অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যার ঘটনার দেড় যুগ ধরে তদন্ত শেষ করে সিআইডি। ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি এদিনে বাংলা একাডেমির বইমেলা থেকে পায়ে হেঁটে বের হয়ে যাওয়ার পথে জঙ্গি হামলার শিকার হন হুমায়ুন আজাদ। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে এই মামলায় জেএমবির ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় সিআইডি । এ মামলার আসামি একজন বন্দুক যুদ্ধে মারা যান। বাকী চারজনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। তারপরও অনেকদিন অতিবাহিত হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষ হয়নি এখনো। এই মামলার অন্যতম আসামি বোমা মিজানকে ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকায় প্রিজন ভ্যানে হামলা করে ছিনিয়ে নেয় জেএমবির সদস্যরা। বোমা মিজান ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। বাকীরা কারাগারে আটক রয়েছে। এ রায়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের অপেক্ষায় রয়েছেন নিহত অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের স্বজনরা। অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ জঙ্গিদের হামলায় আহত হয়েছিলেন ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। প্রায় দেড়যুগের বেশী সময়ে পর লেখক ও অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে আঠার বছর পর এই হত্যা মামলার রায় এলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ তাঁর লেখালেখির জন্য সুপরিচিত ছিলেন।

জানা গেছে, দুই হাজার চার সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে তাকে কুপিয়ে জখম করেছিলো একদল সন্ত্রাসী। এরপর চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ওই বছরেই অগাস্টে তিনি বৃত্তি নিয়ে গবেষণার জন্য গিয়েছিলেন জার্মানিতে। সেখানেই কয়েকদিন পর তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। দুই হাজার চার সালের অগাস্টে হুমায়ুন আজাদ জার্মানিতে থাকা অবস্থায় মারা যান। পরে তাকে ঢাকায় এনে দাফন করা হয়। এর আগেই ঢাকায় হামলার পরদিন মিস্টার আজাদের ভাই হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেছিলেন।

আজাদের স্বজনরা জানায়, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি লেখক হুমায়ুন আজাদকেও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় এই টিএসসি এলাকায়। টিএসসি থেকে মাত্র শ’ খানেক গজ দূরে ফুটপাতের ওপর ফেলে কোপানো হয় তাকে, যে ঘটনায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। বইমেলার মাসে সেই তারিখের একদিন আগে ২৬ ফেব্রুয়ারি খুন হলেন অভিজিৎ, যিনি সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যুক্তিনির্ভর লেখালেখি করে আসছিলেন নিয়মিত। এ জন্য তাকে হুমকিও পেতে হয়েছে। একই স্থানে আবারও একজন লেখক হামলার শিকার হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল  বইমেলার প্রকাশক, লেখক, পাঠক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা। 

তিন বছর তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে পাঁচজনকে আসামী করে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছিল। তবে বাদী পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি পুলিশ দ্বিতীয় দফায় একটি তদন্ত করে। এই তদন্তের ভিত্তিতেই ঘটনার দীর্ঘ প্রায় আট বছর পর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো ঢাকায় দায়রা জজ আদালতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে। এতে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ বা জেএমবি'র পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিলো। কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক জঙ্গি মারা যান। তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল। বাকী চারজন জেএমবি সদস্যকে আদালত মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন।  এর মাঝে একজন পলাতক রয়েছে। 

আদালত রায়ের আগে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, চিকিৎসা প্রতিবেদন, জার্মানি থেকে পাঠানো মৃত্যুর সনদ, ময়না তদন্ত প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে, আক্রমণের কারণেই লেখক হুমায়ুন আজাদ মারা যান।

অভিযোগপত্রে যারা সরাসরি ঘটনার সাথে জড়িত ছিল, এমন জেএমবির পাঁচজন সদস্যকে অভিযুক্ত করার কথা তখন আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন। এদের মধ্যে একজন পলাতক এবং চারজন তখন আটক ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন আটক আছেন আর একজন এখনো পলাতকই আছেন। অন্য দুজন গ্রেপ্তার হলেও ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা করে তাদের ছিনিয়ে নিয়েছিলো জঙ্গিরা। তবে এ সময় একজন পালিয়ে যেতে পারলেও অপরজন পুলিশের হাতে আটক হন ও পরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, অভিজিৎ রায় যেখানে আক্রান্ত হলেন সেখান থেকে হুমায়ুন আজাদের আক্রান্তস্থল খুব বেশি দূরত্বের নয়। আক্রমণের স্টাইল ছিল অভিন্ন, যেমনটা ছিল ব্লগার থাবা বাবা ওরফে রাজীব হায়দারের ক্ষেত্রেও। মাথা ও ঘাড় লক্ষ করে চাপাতির কোপ ছিল তাদের শরীরে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে অভিজিৎ হত্যাকা-ের বছর দুয়েক আগে ২০১৩ সালে প্রথম খুন হন ব্লগার রাজীব হায়দার। কিন্তু দুইবছর পর অভিজিৎ হত্যাকা-ের মাধ্যমেই মূলত: সিরিজ ব্লগার, লেখক প্রকাশক হত্যা শুরু হয়। অভিজিৎ হত্যার একমাস পরই ৩০শে মার্চ খুন হন ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু। ওই বছরে এভাবে মোট ৫ জন ব্লগার, লেখক প্রকাশক দীপন হত্যাকা-ের শিকার হন। বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী এসব হামলার দায় শিকার করে। পরের বছরও হত্যা অব্যাহত থাকে। ব্লগার নাজিমুদ্দীন সামাদ এবং সমকামী অধিকার পত্রিকা 'রূপবানে'র সম্পাদক জুলহাজ মান্নান খুন হন এপ্রিল মাসে। এসব ঘটনায় জঙ্গিগোষ্ঠীর দায় স্বীকারের প্রেক্ষাপটেই ঘটে পহেলা জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.