× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ফেনী হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস যেন সোনার হরিণ

এস এম ইউসুফ আলী, ফেনী

০৯ মার্চ ২০২৩, ০৫:২৬ এএম

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা পেতে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন কয়েকশ কিডনি রোগী। আবেদনের বছর পার হলেও মিলছে না ডায়ালাইসিসের সুযোগ। 

সিরিয়াল পেতে আরেকজনের মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকতে হয় রোগীদের। তাই হাসপাতালে ডায়ালাইসিসের বেড বাড়ানোর দাবি রোগীদের।

ফেনী জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ডায়ালাইসিস করতে হয়। একজনের মৃত্যু হলে তখনই  সুযোগ পান আরেকজন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যারা আর্থিক সংকটের কারণে প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডায়ালাইসিস করাতে পারেন না তারাই বেশিরভাগ ফেনী জেনারেল হাসপাতালে এই সেবা নিতে আসেন। 

এখানে ১০টি ডায়ালাইসিস বেডের মধ্যে দুটি হেমোডায়ালাইসিসের বেড আছে। আটটি বেডে প্রতিদিন তিনজন করে ২৪ জনকে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া হয়। প্রতিটি রোগীর ডায়ালাইসিস করতে ৪-৫ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

ছয় মাসের প্যাকেজে প্রতি রোগী ৪৮টি ডায়ালাইসিস পেয়ে থাকেন। এজন্য তাদের ২২ হাজার টাকা দিতে হয়। ছয় মাস অন্তর অন্তর প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত হতে হয়। আর কিডনি রোগীদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ডায়ালাইসিস করতে হয়।

ফলে ডায়ালাইসিসের জন্য নতুন কোনো রোগীর সিরিয়াল পাওয়া জটিল হয়ে পড়েছে। তাই রোগীদের অনেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের প্রত্যয়নপত্র দিয়ে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, আরও ১০ বেড ডায়ালাইসিস চালু করার মতো কক্ষ আছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলে নতুন করে আরও ১০টি বেড চালু হলে প্রতিদিন ৪৮জন রোগী ডায়ালাইসিস সেবা পাবেন।

ডায়ালাইসিসের জন্য আবেদনকারী সাবিনা আক্তার জানান, তার স্বামী সামান্য বেতনে চাকরি করেন। বেশ কিছুদিন যাবত অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশী থেকে টাকা নিয়ে চিকিৎসা চলছে। 

তার কিডনি সমস্যার কারণে ডায়ালাইসিস করানো খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। আবেদনে বছর পার হলেও এখনো সিরিয়াল পাওয়া যাচ্ছে না।

সাবিনা আরও জানান, স্বামীর চিকিৎসার বাড়তি টাকা কীভাবে জোগাড় হবে সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। জীবিকা নির্বাহের জন্য গৃহকর্মীর কাজ করছেন। ফেনী হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী ডায়ালাইসিসের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।

অপেক্ষায় থাকা রোগী ফখরুল ইসলাম, আশরাফ হোসেন, নুরুল আফসার জানান, ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ডায়ালাইসিস যেন সোনার হরিণ হয়ে গেছে। মাসের পর মাস চলে যাচ্ছে কিন্তু ডায়ালাইসিস করার জন্য সিরিয়াল পাওয়া যাচ্ছে না।

তাদের দাবি, ‘আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী না হওয়ায় সরকারি হাসপাতালে কম খরচে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য ধরনা ধরি। সেই সুবিধাটুকুও বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের তদবিরের কারণে হয়ে উঠছে না। 

সমাজের প্রভাবশালী ও বিত্তবান হওয়ার পরও সরকারি সব সুবিধা এক শ্রেণির লোক ভোগ করতে চায়। কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে অসহায়দেরও সরকারি সুবিধা পাওয়া সহজ হবে।

এ বিষয়ে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. শামীমা সুলতানা বলেন, সরকার চিকিৎসা সেবা দিতে যথেষ্ট আন্তরিক। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসাসেবার মানও আগের তুলনায় অনেক উন্নত হয়েছে।

চাহিদা অনুযায়ী জনবল না থাকলেও আমরা সাধ্যমত সেবা দিচ্ছি। আমরা যখন ওয়ার্ড পরিদর্শনে যাই তখন সেবার বিষয়ে রোগীরাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, জনবল বাড়লে জেনারেল হাসপাতালগুলোতে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করে সেবা দেওয়া যাবে। বড় ধরনের সমস্যা ছাড়া রোগীদের জেলার বাইরে যেতে হবে না।

অপর আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. আসিফ ইকবাল  বলেন, সরকারি হাসপাতালে চমৎকার সেবা পাচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত আবেদনকারী রোগীর বাইরে ডায়ালাইসিস করানো সম্ভব নয়।

একজনের সিডিউল আরেকজনকে দেওয়া যায় না। যে কোনো রোগীর ডায়ালাইসিস শুরু হলে ছয় মাসের প্যাকেজ আছে। কিন্তু এতে হয় না। নতুন করে আবার দেওয়া লাগে।

তিনি আরও বলেন, কোনো রোগী মারা গেলে নতুনরা আবেদনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। ২০২১ সালের আবেদন করা অনেক রোগীকে ডায়ালাইসিস করানো যায়নি। তারা এখনো অপেক্ষমাণ আছেন। গত ছয় মাসে নতুন একজনকে যুক্ত করতে পেরেছি। রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.