× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আরাভ খানকে দেশে ফেরাতে ইন্টারপোলের সাহায্য কামনা

হালিম মোহাম্মদ

১৯ মার্চ ২০২৩, ০৭:২৩ এএম । আপডেটঃ ১৯ মার্চ ২০২৩, ০৭:২৭ এএম

# বায়েজিদ ও মারুফের খোঁজে দুবাইয়ের গোয়েন্দারা

পুলিশ হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম প্রকৃত পক্ষে একজন উচ্চ পর্যায়ের প্রতারক এবং তদ্বিরবাজ ও সোনা পাচারকারী। দুবাইয়ে বসে নানা ধরনের প্রতারণার ফাঁদ পেতে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। বাংলাদেশের বিত্তবান এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা-ডলার হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। অর্থবিত্তের কথা বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার সিংহভাগই ভুয়া বলে জানা গেছে।  

দুবাইয়ে বসে নানা ধরনের প্রতারণার ফাঁদ পেতে অনেককে বোকা বানাতেন পুলিশ হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান। দেশের অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কথা বলে নানা কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন তিনি। তদবিরের নামে কারও কারও কাছ থেকে টাকাও নিয়েছেন। এমনকি নিজের যেসব অর্থবিত্তের কথা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছেন, তার সবকিছুর মালিকও তিনি নন।

দুবাইয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাংলাদেশি নাগরিক নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি দুবাইয়ের এনআরআই জুয়েলার্সের মালিকদের একজন। আরাভের ব্যাপারে তিনি বলেন, আরাভ একদিন আকষ্মিক ৬০ কেজি ওজনের সোনার বাজপাখির লোগো নিয়ে এসেছে। প্রথমে আমরা মনে করেছি, এ তো বিশাল কিছু। ধারণা করেছি, যে ব্যক্তি স্বর্ণের জগতে এত বড় আয়োজন নিয়ে এসেছে, তার তো অনেক কিছু রয়েছে। এরপর শুরু হয় সোনার বাজপাখি নিয়ে মাতামাতি। পরবর্তী সময়ে খোঁজ নিয়ে দেখলাম, এটা পুরোটা স্বর্ণের নয়। যারা তৈরি করেছে, তারা বলছে পুরোপুরি স্বর্ণ দিয়ে তৈরি নয়। এতে স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া হয়। দুবাইয়ের সবাই এখন জানে। আরাভের লক্ষ্য ছিল ভাইরাল হওয়া। তার সবই প্রতারণা। 

ওই প্রবাসী ব্যবসায়ী বলেন, দুবাইয়ে যারা স্বর্ণের ব্যবসা করছি, তাদের কারও আরাভ সম্পর্কে ধারণা নেই। কিছুদিন ধরে সে স্বর্ণের মার্কেটে যাতায়াত করছে। ব্র্যান্ডের জুতা-গেঞ্জি পোশাক পরে আসে। হঠাৎ এসে স্বর্ণের দোকান ভাড়া নেয়। দুবাইয়ে কেউ তাকে চিনত না। সাকিব আল হাসান তাঁর দোকান নিয়ে ভিডিও দেওয়ায় শোরগোল পড়ে গেল। এরপরই তার সম্পর্কে খোজঁ খবর নেয়া শুরু হলো। 

এ ছাড়া আরাভ খান তাঁর নিজের ফেসবুকে পেজে ঘোষণা দিয়েছেন, দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা টাওয়ারের ৬৫ তলায় ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার নম্বর ৬৫১০। আরও ৪-৫টি ফ্ল্যাটের মালিকও তিনি। পাশাপাশি রয়েছে একটি সুইমিংপুল, বাগানসহ বড় ডুপ্লেক্স বাড়িও। যেখানে মাঝেমধ্যে মায়াবী হরিণ জবাই দিয়ে বাংলাদেশিদের দাওয়াত খাওয়াচ্ছেন তিনি। বাগানে চাষ করছেন বাংলাদেশি সবজি। রয়েছে একাধিক দামি গাড়ি। দুবাইয়ের বাংলাদেশি কমিউনিটির একাধিক বাসিন্দা জানান, যে বাড়ির মালিকানা আরাভ দাবি করছে, সেটি আদৌ তার নয়। বাড়িটির মালিক রাসেল নামের বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর।

দুবাই প্রবাসী শফিউল্লাহ জানান, আরাভের প্রতারণার আরেক দিক ছিল প্রভাবশালীদের নাম ভাঙানো। বাংলাদেশি নানা শ্রেণি-পেশার বিত্তবান প্রবং প্রভাবশালী লোকজনের পরিচয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। শফিউল্লাহ আরো বলেন, আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশি যেসব শিল্পী দুবাই গেছেন, তাদের প্রতিশ্রুত টাকা পরিশোধ করেনি আরাভ। আরাভের ঘনিষ্ঠ হিসেবে বায়েজিদ ও মারুফের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন দেশের গোয়েন্দারা। শোরুম উদ্বোধনের দিন এ দুজন দুবাই ছিলেন। জানা গেছে, আরাভ ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে জড়িত। শোবিজ জগতের সঙ্গেও রয়েছে তার সখ্য।

পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আরাভ খানের মালিকানাধীন জুয়েলার্স উদ্বোধন করতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আরাভ পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলায় ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল রবিউলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রবিউলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ছাড়াও অস্ত্র, নারী নির্যাতন, প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধের ৯ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। 

সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই) থেকে তাকে দেশে ফেরাতে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। এদিকে হত্যা মামলার আসামি রবিউল দুবাইয়ে গিয়ে কীভাবে বিত্তশালী হলেন, তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।

এবিষয়ে রোববার এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আরাভ খানকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তাকে দেশে ফেরাতে সব রকম চেষ্টা চলছে। অচিরেই ইন্টারপোলের মাধ্যমে আমরা তাকে দেশে ফেরাতে পারবো। 

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.