ব্রিজ আছে, তবে নদীভাঙনের কবলে ব্রিজের পূর্ব পাড়ের সংযোগ সড়কের প্রায় ১৫ মিটার জায়গা ভেঙে যাওয়ায়, তা ব্যবহারে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তিন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে।
শেরপুরের শ্রীবরদীতে মৃগী নদীর উপর ভারেরা-আড়ালিয়াকান্দা সড়কের এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে ২০০৪ সালে। রাস্তাটির পূর্ব পাশের অংশ ভেঙ্গে গেছে প্রায় ৭ বছর আগে।
তিনটি গ্রামের মানুষের যাতায়াত ও বৃহত্তর বৈশাবিল থেকে সহস্রাধিক একর জমির কৃষি ফসল ঘরে আনার জন্য একমাত্র রাস্তা এটি।
জানা যায় ২০১৬ সালে পাহাড়ী ঢলের প্রবল স্রোতে পূর্ব পাড়ের রাস্তাটি ভেঙে যায়। স্থানীয়দের উদ্দোগে ও ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় বাঁশ এবং কাঠ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করে ব্রীজের সাথে রাস্তা সংযুক্ত করে কোনোমতে পারাপার হচ্ছেন লোকজন। কোন বিকল্প উপায় না থাকায় ঝুকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, ইতিমধ্যেই নদী পারাপার হতে গিয়ে এখানে খাদে পড়ে পথচারীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।এলাকাবাসী বলছেন, ৭ বছর চলছে এই অবস্থা ।অনেকেই অনেকবার আশ্বাস দিলেও তা আজও বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে সেতুতে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা কাঠের মাচা আর আংশিক লরবরে বাঁশের সাঁকো।
গ্রামের দুই শতাধিক ছোট ছোট শিক্ষার্থীকে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রুগী ও মহিলারা চরম ভোগান্তিতে আছেন।স্থানীয়রা বলছেন,এল জি ই ডি’র চরম অবহেলার কথা।
তবে এল জি ই ডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,এটি নদী শাসনের সাথে সম্পৃক্ত। খরস্রোতা নদী হওয়ায় নদী শাসনের উপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, দ্রুত একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রিজটির সংযোগ সড়কের সমস্যা সমাধান করা হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে নদীর গতিপথ কিছুটা পরিবর্তন হয়ে পূর্বদিকের পাড় ভেঙ্গেছে।
অপরদিকে পশ্চিম দিকে নদীর কিছু অংশ ভরাট হয়ে গেছে। ব্রীজটি নির্মাণের সময় দুই পাশের পাড় রক্ষায় স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি
স্থানীয় দোকানদার ফরহাদ আলী জানান, আমি ভারেরা বাজারে ব্যবসা করি। নদীর ওপারে আড়ালিয়া কান্দায় আমার বাড়ি। আমাকে প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার আসা যাওয়া করতে হয়। খুবই কষ্টে আছি।
স্থানীয় যুবক শফিকুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এখানে এসে কয়েক দফায় মানুষের দুর্ভোর দেখে গেছেন। কিন্তু তাদের এ ব্যপারে কোন উদ্যোগ নেই। আমাদের কষ্ট দেখার যেন কেউ নেই।
ভারেরা ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির এক ছাত্র বলেন, স্কুল-প্রাইভেট-কোচিং এর জন্যে আমাকে কমপক্ষে তিন বার আসা যাওয়া করতে হয়। এভাবে ঝুকি নিয়ে যাতায়াতে একটু ভুল হলেই সাকো থেকে পরে আমাদের হাত পা ভাঙ্গতে পারে, রাতে যাওয়া আরও কষ্টকর। দ্রুত রাস্তা করে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল মিয়া সহ অনেকেই বলেন, সেতুর পূর্ব পাড়ের মানুষের প্রায় ১হাজার একর জমি আছে নদীর ওপারে। পশ্চিম পাশের দুইটি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। এছাড়াও এলাকার প্রায় দেড় থেকে দুইশ শিক্ষার্থী যাতায়াতের পথও এটি। এখানে গর্তে পড়ে মানুষ মারাও গেছেন। আমারা খুব কস্টের মধ্যে আছি, রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য দাবি করেন তারা।
গোসাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজামাল আশিক বলেন, আমি নির্বাচিত হবার পর থেকে নিজস্ব অর্থায়নে কয়েকবার এই সংযাগ সড়ক মেরামত করেছি এবং এল জি ই ডি প্রকৌশলীকেও আনা হয়েছে। কিন্তু নদী পূর্ব দিকে সরে আসায় রাস্তা টিকছে না। স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে সমস্যাটির স্থায়ী সমাধানের জন্য আহ্বান জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh