আশুলিয়ায় দিনভর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দখলে থাকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক। প্রতিদিনই সকাল থেকে জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ কক্ষের সামনে অবস্থান করেন বেশ কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। এ সময় হাসপাতালে রোগীর প্রচণ্ড ভিড় থাকে। তারা রোগী ও স্বজনদের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি করেন ছবি তোলার জন্য। এতে সেবাগ্রহীতারা চরম ভোগান্তির শিকার হলেও মুখবুজে নীরবে চলে যান।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, অফিস সময়ে হাসপাতালে দলে দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন কোম্পানির মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা। ডাক্তারদের কক্ষের সামনে রোগীদের ভিড় থাকার সুযোগ নেন তারা। কেউ সুযোগ বুঝেই ঢুকে পড়েন ডাক্তারের কক্ষে। রোগী দেখার সময় সেখানে অবস্থান নিয়ে তারা নিজ কোম্পানির ওষুধ লেখানোর চেষ্টা করেন। কোনো কক্ষ থেকে রোগী বের হওয়া মাত্রই তাদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি শুরু করে দেন। ডাক্তার কোন কোম্পানির ওষুধ লিখেছেন তা জানার চেষ্টা করেন। ছবি তোলেন, দেখেন কোন কোম্পানির ওষুধ লেখা হয়েছে।
আবার কয়েকজন কয়েকটি প্রেসক্রিপশন দেখার পর হঠাৎ এই সুযোগে কৌশলে ডাক্তারের কক্ষে ঢুকে পড়েন। পাশে দাঁড়িয়ে থেকে নানাভাবে ডাক্তারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীর উপস্থিতি টের পেলে দ্রুত তারা সটকে পড়েন। তাদের এমন দৌরাত্ম্য হাসপাতালের প্রতিদিনের চিত্র। এ অবস্থায় ডাক্তাররা যেন অনেকটাই অসহায়। রোগীসহ তাদের স্বজনরাও চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। ওষুধ বিতরণ কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নিয়ে রোগীদের প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলছিলেন এক প্রতিনিধি। তিনি জানান, কারো সমস্যা সৃষ্টি করছেন না, শুধু ছবি তুলছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগীর স্বজন জানান, ওষুধ কোম্পানির লোকেরা ডাক্তার দেখিয়ে বের হলেই ছবি তুলতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। টানাটানির কারণে আমার মতো অনেকে বিরক্ত হলেও বলার কিছুই নেই।
আশুলিয়ার নয়ারহাট মেডিসিন পয়েন্ট এর সামনে গিয়ে দেখা যায় ঔষধ কোম্পানির লোকেরা জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আপনারা রোগীর প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলছেন কেন। তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা কেমেরা দেখে পালিয়ে যান। একই চিত্র দেখা যায় আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেলের সামনে গিয়ে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা জানান, অফিস সময়ে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের হাসপাতালে আসা অবৈধ। এটি তারা করতে পারে না।