রান্নার স্বাদ বৃদ্ধি করতে মরিচের গুড়া, হলুদ ও মসলা ব্যবহারের রীতি সেই মোগল আমল থেকে। সব শ্রেণির মানুষের দৈনন্দিন রান্নায় এই মসলার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। তাই বাজারেও এর চাহিদা বেশি। এ সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার লোভে মসলায় মেশাচ্ছেন ভেজাল।
এমন ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে আশুলিয়ায়। আশুলিয়ার কয়েকটি মিলে মসলায় ভেজাল মেশানোর খবর পাওয়া গেছে। এতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পূর্ব ডেন্ডাবর, জামগড়া, কাঠগড়া, কুটুরিয়া, জিরাবো ও আশুলিয়া বাজার এলাকায় মরিচের গুড়া, হলুদ ও গুড়া মসলায় দেদারছে ভেজাল মেশানো হচ্ছে।
জানা গেছে, শুকনা মরিচ, হলুদ ও গুড়া মসলা ভাঙানোর মিলে প্রতিদিন মণকে মণ তৈরি করা হচ্ছে যার পুরোটাই ভেজাল। মরিচের গুড়ায় ভেজাল রঙ ছাড়াও থাকে নিন্মমানের পচাঁ মরিচ। এ ছাড়াও অন্তত ৩০ শতাংশই থাকে মরিচের বোঁটার গুড়া। এই বোটা গুড়ার পরিমাণ বাড়ানোর জন্য দেয়া হয়।
এ ছাড়াও এসব কারখানায় তৈরি করা হচ্ছে ধানের কুড়া, পঁচা গম, পঁচা ভুট্টা, গরু, ছাগল ও হাঁস মুরগির খাবার। রাসায়নিক কেমিকেল মিসিয়েও বানানো হচ্ছে হলুদ, মরিচ ও ধনিয়ার গুড়া। যা স্বস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মিলের কর্মচারী জানান, ১ কেজির গুড়ার সঙ্গে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত ধানের কুড়া মেশানো হয় এবং পরিমান মত দেওয়া হয় রং। ব্যবসায়ীরা এসব বিষাক্ত উপকরণ মিশিয়ে প্রতিনিয়ত বিক্রি করছে। খোলাবাজারে এসব সরবরাহ করছে বিভিন্ন এলাকায়।
কাঠগড়া এলাকার একটি মিলের মালিক বলছেন, আমরা এক মিল দিয়েই আটা, হলুদের গুড়া, মরিচের গুড়া, ধনিয়ার গুড়া ও গরু বা হাস-মুরগির খাবার গুড়া করি। সে কারনে এসকল গুড়ার মাঝে এসব থাকতে পারে। তবে ভেজালের বিষয় জনতে চাইলে তিনি জানান এটা বর্তমানে স্বাভাবিক বিষয়।
এসব মিল ঘুরে আরোও দেখা যায়, বিএসটিআই, ট্রেড লাইন্সেস, মেডিকেল সার্টিফিকেট ছাড়াই তৈরি করা হচ্ছে মানুষ ও পশুর নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার। এর ফলে মানবদেহে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রোগ বালাই। তবে বাজারের এসব মিল থেকে এ মসলা পাইকারদের মাধ্যমে ভোক্তাদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এলাকার সর্বত্র।
ভেজাল মসলা মানব দেহে কী ক্ষতি করতে পারে এমন প্রশ্নে ডাক্তার এজাজ আহম্মেদ বলন, খাবার অযোগ্য উপাদান দিয়ে তৈরি এসব খাবার খেলে হতে পারে মারাত্মক পেটের সমস্যা। এমনকি গ্যাস্ট্রিক, আলসারে মতো কঠিন রোগও বাসা বাঁধতে পারে শরীরে, হতে পারে ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিও। অতিরিক্ত মাত্রায় এসব পেটে গেলে যে কেউ হতে পারে ফুড পয়জনিংয়ের শিকার।