× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

কিশোরগঞ্জে অনলাইন জুয়ায় ধ্বংসের পথে যুব সমাজ

মো. ইমরান হোসেন, কিশোরগঞ্জ

১১ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:২৭ পিএম

কিশোরগঞ্জে অনলাইন জুয়ায় কিশোর ও যুবসমাজ আসক্ত হয়ে পড়ছে। স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে হাজারো যুবক এ খেলায় মেতে উঠে। এতে দেশীয় অর্থ পাচারের পাশাপাশি পরিবার ও সমাজে নানা অপরাধমূলক ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। এতে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। কিছুতেই যেন এ আসক্ত থেকে ফিরিয়ে নিতে পারছে না তাদের সন্তানদের।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন পাড়া মহল্লার অলি-গলিতে চায়ের দোকান, খেয়াঘাট, ভ্যানস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন মোড়ে এমনকি রাস্তার পাশের ফাঁকা জায়গাও গরম থাকে এ জুয়ায়। এলাকার উঠতি যুবকেরা জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ায় অভিভাবকরা আছেন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায়। কারণ, জুয়ার টাকা জোগাতে অনেকে পরিবারের পকেট কাটছে, আবার অনেকে চুরির মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। অনেক সময় জুয়ার টাকা জোগাড় করতে খুন-খারাপির পথও বেছে নেয় তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার একাধিক যুবক বলেন, এই জুয়া খেলতে লাগে অ্যাপস। অ্যাপস ইনস্টল করার পর লাগে টাকা। এই টাকা রিচার্জ করতে মধ্যস্বত্ব্বভোগী এজেন্টের কাছে যেতে হয়। এতে করে লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী এজেন্টরা। এতে ধ্বংস হচ্ছে কিশোর ও যুবসমাজ। এজেন্টের যত অ্যাকাউন্ট হবে তত বেশি লাভ। কারণ এই টাকা রিচার্জ করতে কাটা হয় কমিশন।

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বগাদিয়া তালতলা গ্রামের এক যুবক বলেন, অনলাইনের এই জুয়া খেলাটা একটা নেশা জাতীয় খেলা। অনেক সময় এক থেকে দুইবার খেলায় জিতে গেলে সামান্য কিছু লাভ হয়। এই লাভের আশায়  বেশি টাকা রিচার্জ করে; তখন হেরে গিয়ে সর্বস্ব হারাতে বসে। পরবর্তীতে রিচার্জের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। তারপরও অনেকেই সহজে বড়লোক হওয়ার আশায় বাজি ধরে।

শুক্রবার ১০ নভেম্বর বার রাত ৮টায় শহরের গৌরাঙ্গবাজার নরসুন্দার নদীর পারে ব্রীজের উপরে ও আশে-পাশে দেখা যায়, বিভিন্ন মার্কেটের চিপা-চাপায় উঠতি বয়সের ছেলেরা মোবাইল ফোনে লুডু খেলছে; কেউ গেইম খেলছে। এটা সাধারণভাবে দেখলে বুঝার উপায় নেই যে তারা লুডু-এর নামে জুয়া খেলছে। আসলে এটাই প্রকৃত অর্থে জুয়া। যারা খেলে তারাও জানে না যে কারা এই অ্যাপসগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। টাকা কখন আসছে, কখন যাচ্ছে। হারলে মনে হচ্ছে, পরের দানেই পাবো। জিতলে মনে হয়, আরেকবার ধরে দেখি, বাধতেও তো পারে। সব মিলিয়ে একটা ঘোরের মধ্যে সময় চলে যায়। অনলাইনে জুয়া খেলার সাইটগুলো নেট দুনিয়ায় ‘বেটিং সাইট’ নামে পরিচিত। সাইটগুলোতে অ্যাকাউন্ট খুলে নিবন্ধিত হয়ে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে চিপস, বিট কয়েন বা অনলাইন মুদ্রা (ডিজিটাল কারেন্সি) কিনতে হয়। এরপর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে জুয়া খেলায় অংশ নিতে হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ ব্যাপারে কথা হয় এক যুবকের সাথে। তিনি বলেন, আমার বর্তমানে কোন কাজ নেই। আমি গেম খেলে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ইনকাম করি। কিন্তু এই খেলায় জিতার চেয়ে হারতে হয় বেশি। তারপরও যখন হারি তখন পরবর্তীতে পাওয়ার আশায় আবারও খেলি।

কিশোরগঞ্জ জেলা অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. আল-আমিন হোসাইন বলেন, ‘এটি একটি সামাজিক সমস্যা। এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ভবিষ্যতে এ ধরণের জুয়া বন্ধে জেলার ১৩টি উপজেলায় জেলা পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।’

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.