কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জেলার সাথে ট্রেন চলাচলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন এখান থেকে প্রতিদিন ইটনা, মিঠামইন, পাকুন্দিয়া, অষ্টগ্রাম, কটিয়াদী, বাজিতপুর, কুলিয়ারচর, রায়পুরা, আশুগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় দুই হাজার যাত্রী যাওয়া আসা করে থাকে।
সব মিলে ট্রেনের আসন সংখ্যা থাকে প্রায় ৪শ, বেশিরভাগ টিকিট থাকে অনলাইনে নামেমাত্র কয়েকটি টিকিট থাকে কাউন্টারে তা ও ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন স্টেশনের। অনলাইনে টিকিটে না পাওয়া গেলে ও ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারের সামনে এবং ২নং ফ্যাট ফর্মে দাঁড়িয়ে ট্রেন ছাড়ার ১ ঘণ্টা আগে থেকে মতি মিয়াসহ আরো ১০/১২ জন, এগারোসিন্দূর, মহানগর প্রভাতি, চট্টলা এক্সপ্রেস,জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, বিজয় এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস এবং পারাবত এক্সপ্রেস এসব ট্রেনের টিকিট দ্বিগুণ এমনকি তিনগুণ টাকা বিক্রি করে থাকে। নামপ্রকাশের অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান মতি মিয়াসহ কয়েকজন প্রতিদিন রেলের টিকিট বিক্রি করে কেউ কিছু বলে না , মনে হয় সে উপরের কোন মহল কে ম্যানেজ করেই এসব করে এবং দ্বিগুণ দামে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে থাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারের সামনের রেলওয়ে হকার শ্রমিক নেতা মতি মিয়ার একটি দোকান রয়েছে তাই বিভিন্ন কৌশলে তার একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ও এসব টিকিট বিক্রি করে থাকে। এসব টিকিট ভৈরববাজার ছবিঘর সিনেমা রোড বলাকা কম্পিউটারসহ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি দিনি প্রায় কয়েকশ টিকিট অনলাইন থেকে নামিয়ে কালোবাজারিদের হাতে পৌঁছে দিয়ে থাকে। তারা অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র(এনআইডি) ও মুঠোফোন নাম্বার ব্যবহার করে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করে থাকে ।
এ বিষয়ে রেলওয়ে হকার শ্রমিক নেতা মতি জানান, ভৈরব বলাকা কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান সহ আরো তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজারিরা বিক্রি করে এ কাজে আমি জড়িত ছিলাম অনলাইন হওয়ায় আমি এ কাজ ছেড়ে দিয়েছি ।
বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বললে তাড়া বলেন, অনলাইনে টিকিট নিতে যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর প্রয়োজন পড়ে। আর কালোবাজারি চক্র নানাভাবে অন্যদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংগ্রহ করে অনলাইন থেকে টিকিট নামিয়ে নিচ্ছে। এসব টিকিটই কালোবাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে । আর ট্রেনে টিকিট যাচাইয়ের ব্যবস্থা থাকলে ও কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর যাচাইয়ের ব্যবস্থা না থাকায় টিকিট কালোবাজারি হয় বেশি । তাই কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান সাধারণ যাত্রীরা।
প্রধান বুকিং সহকারী সোহাগ বলেন, আমাদের কাউন্টারে কাছের কয়েকটা স্টেশনের কম দামের টিকিট পাওয়া যায় আর অবিক্রীত টিকিট থাকলে সে গুলো বিক্রি করতে পারি ও যাত্রীদের অনলাইনের টিকিট প্রিন্ট করি পাশাপাশি স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করতে পারি এছাড়া আমাদের আর কোন কাজ নেই কাই কালোবাজারির টিকিটের বিষয়ে আমার জানান নেই।
ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ইউসুফ বলেন, টিকিট বিক্রির বিষয়টা আমি জানি না এখন যেহেতু জানতে পেরেছি বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং ফ্যাট ফর্মে অবাধে কেউ টিকিট বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অফিসার ইনচার্জ অতিরিক্ত দায়িত্ব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী চৌকি ভৈরববাজার এস.এম. তাজভির বলেন আমাদের জনবলের কারণে দায়িত্ব পালনের হিমশিম খাচ্ছি তাই বিভিন্ন অপরাধ গুলো চিহ্নিত করা সমস্যা হচ্ছে তবে অনলাইনের টিকিট যেহেতু গাড়িতে টিটি ও টিসি ওনারা টিকিট চেক করলে আমাদের দায়িত্বটা অনেক টা কমে যায়। তবে আমরা বিষয়টি দেখব যদি স্টেশন এরিয়ার মধ্যে অবাধে কেউ টিকিট বিক্রি করে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলিম হোসেন সিকদার বলেন , কেউ যদি কালোবাজারি টিকিট বিক্রি করে থাকে বিষয়টি আমার জানা নেই তবে ফ্যাট ফর্মে যাত্রীদের কাছে জনসম্মুখে কেউ টিকিট বিক্রি করলে তাকে আটক করে মামলা দিয়ে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিকুর রহমান সবুজ বলেন ,টিকিট কালোবাজারির বিষয়ে একা দিক অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে এ বিষয়ে প্রশাসনের একাধিক টিম কাজ করছে দ্রুত তাদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2023 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh