চলতি বছরের ২২ অক্টোবর হতে ৪ নভেম্বর মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় চাঁদপুর অভয়াশ্রম এলাকা থেকে জব্দকৃত ১৯৪টি জেলেনৌকার মালিকানা শনাক্ত না হওয়ায় ইঞ্জিনসহ নৌকা রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
চাঁদপুর সদর নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুজ্জান জানান ,মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে এবার অভিযানে ১৮ কোটি ২৯ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫শ মিটর কারেনজাল, ১৯৪টি জেলে নৌকা,৫০৮ জন জেলেকে মা ইলিশ ধরার অপরাধে আটক করা হয় এবং ২২ হাজার ২শ ৩ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয় ৷ মামলা করা হয় ৫৭টি। এর মধ্যে নিয়মিত মামলায় ১৯৮ জন জেলেকে গ্রেফতার করা হয় ৮৫ জনকে জিম্বায় প্রদান করা হয় এবং ২২৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয় এবং মোট ২৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় বলে জানান তিনি ৷
জব্দকৃত এসব নৌকার মূল্য বাজার দরে কোটি টাকারও বেশি। তবে জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায় জেলা টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গরীব জেলেদের নৌকাগুলো জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হবে। যাদের নৌকা জব্দ করা হয়েছে তারা এডিএম কোর্টে আবেদন করলে জরিমানা করে নৌকাগুলোর মালিক কে দিয়ে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে কয়েকটি নৌকা ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে এখনো বেশ কিছু নৌকা রয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত মালিকা সনাক্ত না হলে এগুলো টেন্ডারে বিক্রি হবে।
চাঁদপুর সদর নৌ থানার পাশে লঞ্চঘাটের পূর্ব পাশের জেটির পাশে দেখা যায় শতাধিক ছোট বড় জেলে নৌকা। যেগুলোর মধ্যে কোনো কোনো নৌকায় একাধিক ইঞ্জিন রয়েছে। বড় নৌকাগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য আড়াই লাখ টাকা। একদম ছোট সাইজের ইঞ্জিন চালিত নৌকার দাম ৫০ হাজার টাকা। সে হিসেবে জব্দৃকত ১৯৪ টি নৌকার মূল্য হয় কোটি টাকারও বেশি ৷
কয়েকজন জেলে জানান, আমরা বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে লোন নিয়ে কেউবা গরু- ছাগল বিক্রি করে কিন্বা দারদেনা করে নৌকা তৈরি করে থাকি সেই নৌকাগুলো যদি নদীতে নামার পর সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ জব্দকরে ফেলে তাহলে আমাদের মাছ ধরা বন্দ হয়ে যায় কিন্তু লোনের কিস্তিত বন্দ হয়না কিস্তি যথারিতি আমাদের চালিয়ে যেতে হয় এতে করে আমাদের আরো অনেক সহয়সম্বল খুয়াতে হয় এবং আমাদের পরিবার পরিজনদের নিয়ে অসহায়াত্বের জীবনযাপন করতে হয় ৷
জব্দকৃত নৌকাগুলো যদি অল্পকিছু জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হতো তাহলে আমাদের কস্ট কিছুটা হলেও কম হতো৷
কয়েকজন জেলে বলেন, অভিযান চলাকালীন সময়ে আমরা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলেছি নৌকাগুলো তাৎক্ষণিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করার জন্য। কিন্তু তা আর হয়নি। যে কারণে কোটি টাকা মূল্যমানের নৌকাগুলো নষ্ট হচ্ছে। কারণ, নৌকাগুলোর মালিক শনাক্ত ছাড়া জরিমানা কিংবা ছাড় দেওয়া হয় না। কারণ এসব নৌকা জব্দের সময় মামলা করে জব্দ তালিকা করা হয়। বর্তমানে এসব নৌকা নৌ পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের জাটকা সংরক্ষণের দুই মাস (মার্চ-এপ্রিল) শুধুমাত্র হাইমচর উপজেলায় অভিযানকালে ২৮টি জেলে নৌকা জব্দ হয়। সেগুলো মৎস্য আইনের বিধান অনুযায়ী উপজেলা টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১১ লাখ ৪১ হাজার ৮০৫টাকা তাৎক্ষণিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি হয়। এসব টাকা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শেষে সরকারি কোষাঘারে জমা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এদিকে, অভয়াশ্রম এলাকার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও সদর উপজেলায় একই নিয়মে জব্দকৃত জেলেদের জব্দকৃত নৌকাগুলো যেখানেই আছে, সেখানে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, জব্দকৃত নৌকাগুলো তাৎক্ষণিক টেন্ডারে বিক্রি হয়নি। তবে এখনো অনেকে নৌকার মালিক জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জরিমানা দিয়ে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন। মালিক শনাক্ত না হলে এসব নৌকা টেন্ডারে বিক্রি হবে।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2023 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh