× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা জামায়াত বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আটমাস পর বসতভিটায় ফিরলেও গ্রামে গ্রামে এখন খাবার সংকট

আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান

২৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৩ পিএম

পাহাড়ের নতুন সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) নির্যাতন, নিপীড়ন, অত্যাচার ও আতঙ্কের ভয় নিয়ে গত ২৩ এপ্রিল নিজ বসতভিটে ছেড়ে পালিয়ে যায় দুর্গম এলাকার বসবাসরত মারমা, তচঙ্গ্যা, খিয়াং, খুমী, ম্রো ও বমসহ কয়েক সম্প্রদায়ের মানুষ। গোলাগুলির আতঙ্কিত হয়ে একে একে সব পরিবারের লোকজন গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র স্থানে ঠাঁই নিয়েছিলেন। 

প্রায় আটমাস নিজের ঘরবাড়ি, জন্মভিটা ছেড়ে কেউ ভয়ে জঙ্গলে, কেউ জুমঘরে কেউ আবার আত্মীয়দের বাসায় ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর সেসব মানুষজন গ্রামে ফিরে এসেছে। 

টানা আটমাস পর নিজেদের বসতভিটায় ফিরে আসলেও সেসব গ্রামের মধ্যে দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট। এতে গ্রামবাসীদের মাঝে চোখে মুখে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।

জানা গেছে, গত ৫ নভেম্বর রুমা উপজেলার পাঁচকিলো দূরে মুনলাই পাড়ার গ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি  প্রথম পর্যায়ের সরাসরি বৈঠক শুরু হয়। টানা কয়েকঘণ্টা বৈঠকের শেষে চারটি বিষয়ে দাবি নিয়ে দু’পক্ষে সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। এরপরই পাহাড়ের কিছুটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠে। প্রথম বৈঠক শেষে সেনাবাহিনী সহযোগিতায় গত শনিবার পাইক্ষ্যং পাড়া, থানচি প্রাতা পাড়া বম সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীরা ফিরে এসেছেন। এছাড়াও মারমা,তচঙ্গ্যা, খিয়াং, খুমী, ম্রোসহ অনান্য পরিবারও ফিরতে শুরু করেছে।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৩৪১ পাইক্ষ্যং মৌজায় ১২টি গ্রাম রয়েছে। সেসব গ্রামের মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে সবাই পালিয়ে গেছে। ১২টি গ্রামের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খামতাং পাড়া ও পাইক্ষ্যং পাড়া। তাছাড়া সবগ্রাম মিলে ১০টি পরিবার মাত্র জুম চাষ করতে পেরেছে। ৭৭টি পরিবার জুমচাষ করতে পারেননি।অনান্য পরিবারগুলো ফিরে আসলেও গ্রামে গ্রামে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। একই স্বরুপ থানচি দুর্গম এলাকার প্রাতা পাড়াতে যেসব পরিবার ফিরে এসেছেন সেকগানে প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট।

পাইক্ষ্যং পাড়া ও প্রাতাপাড়া কারবারী পিতর বম ও পার্কেল বম সংবাদ সারাবেলাকে জানান, আটমাস ধরে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে ছিলাম। এখন এসে দেখি ঘর ভাঙ্গা,হাড়িপাতিলসহ সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে মুল সমস্যা হল খাবার। বিভিন্ন সমস্যা কারণে জুম চাষ করতে পারেনি।

মৌজার হেডম্যানরা জানিয়েছেন, গত শনিবার পাইক্ষ্যং পাড়াতে ৯৭ পরিবারদের মাঝে ৫৭টি পরিবার ফিরে এসেছে। গতকাল বুধবার আরো দুটি পরিবার এসেছেন। প্রাতা পাড়াতে ২৮টি পরিবারের ১১টি পরিবার ফিরে এসেছেন। তবে কেউ কেউ শহরে আবার কেউ অন্য গ্রামে বসবাস করছেন। তারা ফিরবেন কিনা সেটি তাদের জানা নেই। অন্য গ্রামগুলোতে যোগাযোগের করতে না পারায় খবর নেওয়া যায়নি। তবে এখন সব গ্রামের মানুষ খাবার সংকটে ভুগছে। 

বম সোস্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লাল জার লম বম সংবাদ সারাবেলাকে জানান, প্রথম সংলাপ শেষে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতেই মানুষজন গ্রামে ফিরতে শুরু করেছে। গ্রামের খাদ্য সংকটের বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর সাথে কথা হয়েছে। জেলা পরিষদ থেকে সহযোগীতা পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

 রোয়াংছড়ি উপজেলার চেয়ারম্যান চহাইমং মারমা সংবাদ সারাবেলাকে জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পাইংক্ষ্যং পাড়া থেকে পালিয়ে যাওয়া অনেক পরিবার এখন নিজ এলাকায় ফিরে এসেছেন। তবে খাদ্য সংকটের বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। সম্মতির পেলে সেসব এলাকায় সহযোগিতা করা হবে।

থানচি উপজেলায় ইউএনও আবুল মনসুর জানান, ফিরে আসা পরিবারদের মাঝে যেহতু খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে সেহেতু প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করানো হবে। 

উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর থেকে বান্দরবানে কেএনএফ নামে নতুন একটি সশস্ত্র সংগঠন তৎপরতা শুরু করে। এ সংগঠনটির সাথে সংঘর্ষে ও তাদের পুঁতে রাখা বিস্ফোরকে সেনা সদস্যসহ এ পর্যন্ত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছে কেএনএফ’র ১৭ জন সদস্য।


আরও পড়ুন

দীর্ঘ ৭ মাস ক্ষুধার্ত পেটে সংগ্রাম করা এক অন্তঃসত্ত্বার গল্প

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.