পটুয়াখালী জেলা শহরের অর্ধশতাধিক স্থানে শীত এলেই যেন নিম্ন আয়ের মৌসুমি পিঠা বিক্রেতাদের ভাগ্য খুলে যায়। এদের প্রতিদিন ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার পিঠা বিক্রি হয়। কখনো কখনো পিঠা বিক্রি ৫০০০ টাকার অধিক ছাড়িয়ে যায়। পিঠা বিক্রেতাদের প্রত্যেকেই আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
প্রতিবছর শীত এলেই তাদের স্বল্পপুঁজি নিয়ে বাড়তি আয়ের আশায় পিঠা বিক্রি করেন। শীতের তিন থেকে চার মাস এই পিঠা বিক্রি বাকী দিনগুলোতে রিকসা বা অটো চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
বিভিন্ন টং দোকানে জ্বলছে সারি সারি মাটির চুলা। প্রতিটি চুলার ওপরে বসানো হয়েছে একেক ধরনের পিঠার ‘খোলা’। একটু পর পর খোলার ঢাকনা তুলে ঢেলে দেয়া হচ্ছে চালের গুঁড়ার ‘গোলা’। কয়েক মিনিট রেখেই গরম গরম চিতই,ভাপা পিঠা নামিয়ে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে ক্রেতাদের হাতে। প্রতি প্লেটের পিঠার পাশেই দেয়া হচ্ছে পছন্দমতো সরিষা ভর্তা, ধনেপাতা ভর্তা, মরিচ ভর্তা ও চিড়িং মাছের শুঁটকি ভর্তা, লাউশাঁক ভর্তাসহ নানা ধরনের ভর্তা। এমন দৃশ্য পটুয়াখালী শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তার ফুটপাতে।
জেলা শহর ঘুরে দেখা গেছে, শীতের শুরুতেই শহরের অর্ধ শতাধিক স্থানে ভাগ্য দেবী ভর করে এসব মৌসুমি পিঠা বিক্রেতাদের টং দোকানগুলোতে। একাধিক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, শীতের রাতে গরম গরম পিঠার সঙ্গে সুপরিচিত পটুয়াখালীর প্রতিটি মানুষ। এখানে চিতই ও চডা পিঠা খুবই জনপ্রিয়। বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় জমান এই ফুটপাতে বসা এসব পিঠার দোকানে। লাইন দিয়ে পিঠা খান আবার কেউ কেউ খেয়ে বাসার লোকজনের জন্যও নিয়ে যান। শহরে পিঠা বানানোর ঝামেলায় না গিয়ে তৈরি পিঠা কিনতে বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন অনেকে।
পটুয়াখালী শহরের প্রায় প্রতিটি মোড়েই রয়েছে পিঠার দোকান। শুধু শীত মৌসুমেই দোকানগুলো দেখা যায়। এখানে প্রতিটি চিতই পিঠা বিক্রি হয় ৫ ও চডা পিঠা ১০ টাকা দামে বিক্রি হয়। বিকেল থেকে শুরু করে রাত ১১ টা পর্যন্ত চলে এসব পিঠা বিক্রি।
পটুয়াখালী শহরের সেন্টার পাড়ার বাসিন্দা মদন ভট্টাচার্য বলেন ‘বাসায় পিঠা তৈরি করা এখন অনেক কষ্টের। তাই বাজার থেকে পিঠা কিনে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। বাড়িতে বানাতে যে কষ্ট আর আর্থিক খরচ, তার চেয়ে এটাই ভালো।’
আরেক ক্রেতা শুনিল চন্দ্র বলেন, হঠাৎ করেই ‘সন্ধ্যার পরে একটু ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। প্রায় সময়ই তখন ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান থেকে আমি পিঠা খাই। চডা পিঠা আমার খুব পছন্দের। হালকা ঠাণ্ডার ভেতর পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা।’
কলাতলা মোড়ের পিঠা বিক্রেতা আকলিমা বলেন, ‘শীতের মৌসুম এলেই আমি ও আমার স্বামী পিঠা বিক্রি করি। অন্য সময়ে দিনমজুরের কাজ করি সে রিকসা চালায়। গত চার বছর থেকেই এই শীতের সিজনে পিঠা বিক্রি করি। বিকেল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গাহেক (ক্রেতা) থাকে। কিন্তু গত বছরের চাইতে এবার চাল, লাকড়ির দাম অনেক বেশি, তাই আগের মতো তেমন লাভ হচ্ছে না।’ তবুও ভালোভাবেই এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে আমাদের সংসার চলছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh