× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

জামাই মেলা এখন মাছের মেলা, কোটি টাকার বেচাকেনা

শরীফ ইকবাল রাসেল, নরসিংদী

২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৫৯ পিএম

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বরাব এলাকায় প্রতি বছর বসে কুঞ্জমেলা। আর একে ঘিরে বসে ‘মাছের মেলা’। দুইশ ছিয়ানব্বই বছর ধরে হয়ে আসা মেলাটি এখন মাছের মেলায় রূপ নিয়েছে। 

এই মেলা থেকে আশপাশের গ্রামের জামাইরা সবচেয়ে বড় মাছ কিনে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যায়। এ কারণে মেলার সময় আশপাশের গ্রামগুলোতে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ।

মূলত এটা জামাই মেলা হলেও কালের পরিক্রমায় এটাকে এখন মাছের মেলাই বলে থাকে। প্রতি বছরের পৌষ মাসের দ্বিতীয় সোমবার কাক ডাকা ভোর থেকে বেলা দশটা পর্যন্ত চলে মাছ কেনা-বেচার ধুম। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শতাধিক মাছ বিক্রেতা বড় বড় মাছ নিয়ে বসেন মেলায়। এ নিয়ে মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতাও হয়, কে কতো বড় মাছ মেলায় আনতে পারেন।

অন্যদিকে স্থানীয় জামাই-শ্বশুরদের মধ্যেও বড় মাছ কেনার নিরব প্রতিযোগিতা চলে। মেলায় নিজ এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তবৃন্দরা ছুটে আসেন মাছ কিনতে, আবার কেউ আসেন মাছ দেখতে। মেলায় সামুদ্রিক চিতল, বাঘা, আইড়, বোয়াল, রুই, কাতল, কালী বাউশ, সাহস, গলদা চিংড়ি ও রূপচাঁদাসহ হরেক রকম মাছ উঠে। মেরায় প্রতি বছরই বিক্রি হয় কোটি টাকার মাছ। মূলত এটা জামাই মেলা হলেও সবাই এটাকে মাছের মেলা বলে থাকে। 

সরেজমিনে মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, মাছ বিক্রেতারা নানা অঙ্গভঙ্গি করে সুর ধরে ডেকে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। কেউ কেউ বড় আকৃতির মাছ উপরে তুলে ধরে ক্রেতাদের ডাকছেন। এটি এক সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মেলা হলেও সময়ের সাথে সাথে এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নেয়। 

স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিনশো বছরের পুরানো এই মেলা থেকে আশপাশের গ্রামের জামাইরা সবচেয়ে বড় মাছ কিনে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যায়। এ কারণে মেলার সময় আশপাশের গ্রামগুলোর গরে ঘরে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। মূলত এটা জামাই মেলা হলেও সবাই এটাকে মাছের মেলাই বলে।এ কারণে মেলার সময় আশপাশের গ্রামে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ।

আয়োজকরা জানান, স্থাণীয় লোকজন ছাড়াও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু লোকজন আসেন। প্রতি বছর এই এলাকার বরাবো শ্রী শ্রী কানাইলাল জিউর মন্দিরে মাসব্যাপী লীলা কীর্থন হয়ে থাকে। এই কীর্তনের যুগলমিলন হয় পৌষ মাসের দ্বিতীয় সোমবার আর তাই এই সোমবারেই মাছের মেলাটি হয়ে থাকে। আর মেলাটি তিনদিন স্থায়ী হয়। মেলায় মাছ ছাড়াও আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টি, বস্ত্র, হস্ত ও কুটির শিল্পের নানা পণ্যেরও আমদানি হয়। 

মন্দির কমিটির সভাপতি হীরা লাল কর জানান, ২৯৬ বছর ধরে শুরু হওয়া এই কুঞ্জ মেলাটি এখন ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। এ মেলা পলাশ উপজেলার সবচেয়ে বড় মাছের মেলা হিসেবে স্বীকৃত।

তিনি আরও জানান, শুরুতে মেলাটি অনুষ্ঠিত হতো ক্ষুদ্র পরিসরে। এখন এটি উৎসবে পরিনত হয়েছে। এটি এক সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মেলা হলেও সময়ের ব্যবধানে এ মেলাটি এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। এখানে শুধু মাছ নয়, এ মেলাকে কেন্দ্র করে বস্ত্র, হস্ত, চারু- কারু, প্রসাধনী, ফার্নিচার, খেলনা, তৈজসপত্র, মিষ্টি ও কুটির শিল্পের নানা পণ্য।

স্থানীয় জিনারদী ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম গাজী বলেন, মেলাকে ঘিরে আশপাশের মানুষ ছাড়াও দুর দুরান্ত থেকে বহু লোকের সমাগম ঘটে। যার জন্য আইন শৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্খা থাকে, তাই পরিষদের পক্ষ থেকে গ্রাম পুলিশ ও থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়ে থাকে। এলাকায় মাছের জন্য এ মেলা স্থানীয়দের জন্য একটি উৎসবের আমেজ। একে অপরের বাড়িতে বেড়ানো আর খোঁজ-খবরের মধ্যে দিয়ে চলে কুশল বিনিময়। আর দেখা মেলে সম্প্রীতির এক মেলবন্ধন।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.