× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

পাহাড়ে ফিরে আসুক শান্তি ও শৃঙ্খলা

আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান

১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম

পার্বত্য জেলা বান্দরবান। এই জেলাকে বলা হতো নৈসর্গিক লীলাভূমি ও সবচেয়ে শান্তপ্রিয় জেলা। এখানে ১২ জাতিসত্ত্বা ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী বসবাস বলে সম্প্রীতি জেলাও বলা হতো। কিন্তু গত তিন বছর খুন, নির্যাতন, নিপীড়ন, অপহরণ ও নানা চাঁদাবাজির ফলে জেলাটি অশান্ত হয়ে উঠেছে।

তাছাড়া নতুন সংগঠন মাথা গজিয়ে উঠার কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে বেড়েছে আতঙ্ক। যার কারণে এখনো বান্দরবানে ফিরেনি শান্তির পরিবেশ। দিনশেষে বিভিন্ন দুর্গম এলাকার সাধারণ মানুষ ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে জীবনযাপন করছেন। তবে আগের মতো পাহাড়ে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসুক সেটি চান জেলার সর্বস্তরের মানুষ।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ২৫ বছরে শান্তির চুক্তির পর ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে প্রাণ হারিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। ২০১৯ সালে খুন হয়েছেন ৬ জন, ২০২০ সালে ১১ জন, ২০২১ সালে ৪ জন, ২০২২ সালে ১৮ জন ও ২০২৩ সালে ২৬ জন এবং সেনাসদস্য ৫ জনসহ আহত হন অন্তত আরো ৬ জন। এছাড়াও পাহাড়-সমতলে অভিযানে ৫৫ জন জঙ্গিসহ কেএনএফের ১৭ জন সদস্যকেও গ্রেফতার করে র‍্যবের বাহিনী।

গোলাগুলি, খুন ও দুর্ঘটনায় বান্দরবানে এক বছরে ৩১ প্রাণহানি

গেল ২০২৩ সালে ৭ জানুয়ারি মাসে বান্দরবানের থানচি - রুমা দুই উপজেলা সীমান্তের রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের গহীন অরণ্যের র‌্যাবের সাথে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও জঙ্গি বাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় হয়। এসময় ৫ জন জঙ্গিকে আটক করেছে র‌্যাব। এঘটনায় র‌্যাবের ৮জন সদস্য আহত হন। ১২ জানুয়ারী মাসে বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার পাঁচজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ১৪ জানুয়ারি মাসে বান্দরবানে রোয়াংছড়ি তারাছা ইউনিয়নের উনিহ্লা হেডম্যান পাড়া এলাকা থেকে মংলুমাং মারমা (৪২)এক ব্যাক্তির ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৯ জানুয়ারি মাসে  বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে যৌথবাহিনী বাহিনীর বন্দুক যুদ্ধে কেএনএফ সদস্যের বেনেট ম্রো (২৮) মারা যান। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১টি অস্ত্র ও ৩৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।

গেল ৫ ফেব্রুয়ারি মাসে বান্দরবানের রুমায় সন্ধ্যায় বগালেক পাড়া গীর্জায় কীর্তন চলাকালে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএমএফ) সদস্যরা লালরাম চনহ্ বম লারাম (৪৩) এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রুমা সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হারমন পাড়া থেকে দার্জিলিং পাড়া যাওয়া পথে পার্শ্ববর্তী রুনতং খুমী পাড়া পাহাড়ে একটি খাদ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। একই দিনে  বান্দরবানের থানচিতে সাঙ্গু নদীর পদ্ম মোড় এলাকায় ২টি নৌকার মুখোমুখি সংঘর্ষে সামংগ্যা ত্রিপুরা (৫০) নৌকা মাঝি নিহত হন। ৮ ফেব্রুয়ারী বান্দরবানের থানচি উপজেলার লোয়াংমুয়াল রেমাক্রি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় টানা ১২ ঘন্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার দুদর্ষ ১৭ জঙ্গি ও কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের ৩ সদস্য আটক হয়। এসময় বিপুল পরিমাণ দেশি ও বিদেশি অস্ত্র, বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি, গোলাবারুদ ও নগদ ৭ লাখ টাকা উদ্ধার করে র‍্যাব। ১২ ফেব্রুয়ারি বান্দরবান শহরে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মা আমেনা বেগম (৩৬) ও তার ৫ বছরের প্রতিবন্ধী মেয়ে আয়েশা বেগম নিহত হন।

১২ মার্চ মাসে বান্দরবানের থানচি লিক্রে সড়কে ২২ কিলোমিটার এলাকায় আসার পথে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত ভাবে গুলি বর্ষণ করে। এসময়  সন্ত্রাসী হামলায় ট্রাক চালক মো. জালাল উদ্দিন (২৭) গুলিবিদ্ধ ও ইট ভাটার শ্রমিক মো: রুবেল (২৯) আহত হন। ১৩ তারিখে বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ)  সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং আহত হন আরো দুই সেনা সদস্য। ১৪ তারিখে বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতী এলাকায় র‌্যাবের অভিযানে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার প্রশিক্ষন কমান্ডার দিদার হোসেনসহ ৯ জঙ্গিকে আটক করেছে। এসময় ৬টি দেশি বন্দুক ও ১টি বিদেশি অস্ত্র, ৫রাউন্ড কার্তুজ, দূরবীন, সুইজ গিয়ার, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রি উদ্ধার করে র‍্যাব। পরের দিন বান্দরবানে থানচিতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মংক্যচিং মারমা (৪৫) নামে এক জুমচাষীকে কুপিয়ে হত্যা করে তার প্রতিপক্ষ।

২০ মার্চ বান্দরবানের রুমার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের সুনসং পাড়া ও থাইক্ষ্যং পাড়া থেকে ট্রাক গাড়িতে করে রুমা বাজারে আসার পথে পাহাড়ের গভীর খাদে পড়ে পাঁচজন নারী ও একজন শ্রমিকসহ ঘটনাস্থলে ছয়জন নিহত এবং আহত হন অন্তত ১৪জন। নিহত পাঁচ নারী হলেন- নুনথারময় বম (৩৫), লিমময় বম(২৩), লালভারকিম (৪০), জিংঠাত সিয়াম(১৫), জিংহোম বম(৪৫)ও অপর একজন হ্লাগ্যপ্রু খিয়াং(৪৫)। পরের দিন রোয়াংছড়িতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনায় থমচু বম (৭৪) নামে একজন নিহত ও আহত হন আরো দুইজন। পরে রামথারপাড়া এলাকায় থমচু বমের (৭৪) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

৭ এপ্রিল মাসে রোয়াংছড়ি উপজেলার খামতাং পাড়ায় রাতে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ সংস্কার) মধ্যে দফায় দফায় গুলিবর্ষণ হয়। এসময় গোলাগুলিতে ভান দু বম, সাং খুম, সানফির থাং বম, বয়রেম বম, জাহিম বম, লাললিয়ান ঙাক বম, লালঠা জার বমসহ ৮ জন নিহত হন । ২৭ এপ্রিল দুটি সন্ত্রাসী সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় বমরামসাং বম (২৩) একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে সংবাদ পেয়ে মুলপি পাড়ার গভীর অরন্য থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

৮ মে মাসে রোয়াংছড়ি উপজেলায় দুই সশস্ত্র গ্রুপের গোলাগুলিতে ৩ জন নিহত হয়েছে। উপজেলার ক্যাপ্লাং ও পাইখ্যং পাড়ার মধ্যবর্তী জঙ্গল থেকে অজ্ঞাত তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। ১৬ মে সেনাটহল দল জারুলছড়ি পাড়ার নিকটস্থ পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে কুকিচিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের আইইডি বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে। এতে দুইজন অফিসার ও দুই সৈনিক আহত হয়। আহতদের দ্রুত হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সিএমএইচ চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় আহত দুই সৈনিক মারা যায়। পরের দিনে রুমা উপজেলায় কেএনএফ পুতে রাখা ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরনে জুয়েল ত্রিপুরা (২৭) নামে একজন নিহত হন ও আহত হয় আব্রাহাম ত্রিপুরা (৩৫) নামে আরো একব্যক্তি।

১৭ মে রুমায় সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলায় দুই জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ২৩ মে রুমা ও থানচি লিক্রে সীমান্ত সড়কের ধোপানিছড়া এলাকায় বিজিবি ক্যাম্পের পাশ্ববর্তী পরিচ্ছন্নতার কাজ করার সময় সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) পুতে রাখা ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে মো: রাশেদ (১৮) নামে  এক শ্রমিকের মৃত্যু হয় ও অপর এক শ্রমিক গুরুতর আহত হন। পরের দিনে বান্দরবান সদর উপজেলায় সড়ক দূর্ঘটনায় আহত এক মোটর সাইকেল চালককে হাসপাতালে না নিয়ে ট্রাক ড্রাইভার কর্তৃক রাস্তায় ফেলে দেওয়ায় চিকিৎসা না পেয়ে মেদুসে মার্মা (৩৫) নামে মোটর সাইকেল চালক মৃত্যু হয়।

১ জুন মাসে রুমা উপজেলায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করে। এসময় পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে সেনা সদস্য সৈনিক তুজাম (৩০) প্রাণ হারান। ১৭ জুন রুমায় ছিলোপি পাড়ায় কেএনএফ গোষ্ঠীর পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর এক সৈনিক মোন্নাফ হোসেন রাজু (২১) নিহত হন। এ ঘটনায় অপর সৈনিক মো. রেজাউল (২৪) শরীরের বিভিন্ন অংশে স্প্লিন্টারের আঘাতে গুরুতর আহত হন।

২২ সেপ্টেম্বর মাসে রোয়াংছড়ি তারাছা ইউনিয়নের নোয়াপাড়ার  লতাঝিড়ি (বই খ্যং) এলাকায় মদ পান অবস্থায় কথা কাটাকাটির জেরে ক্যথুইপ্রু মারমাকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যা করে তার বন্ধু মংরে মারমা (৩৭)। ২৮ অক্টোবর মাসে  থানচি উপজেলার দুর্গম রেমাক্রী ইউনিয়নে সাঙ্গু নদীতে নৌকা ডুবে তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন-  লং রে খুমি (২১),লংবে খুমী (৪৫) ও ছাই খুমী (৩০)।

ফিরে আসুক শান্তি ও শৃঙ্খলা

এদিকে পাহাড়ের শান্তি ফিরিয়ে আনতে গত ২২ জুন পার্বত্য জেলা পরিষদ সভা কক্ষে পরিষদ চেয়ারম্যান ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহবায়ক ক্যশৈহ্লা শান্তি প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করে। গত ১৯ জুলাই, ৪ আগস্ট, ২১ সেপ্টেম্বর পৃথক স্থান থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ১০ সদস্য ও ভার্চুয়ালি কেএনএফের ৪ সদস্য বৈঠকে অংশ নেয় এবং গত ৫ নভেম্বর সরাসরি প্রথম বৈঠক হয়। প্রথম বৈঠকে চারটি বিষয়ে সমঝোতা পর পাহাড়ের কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। এরপর নিজে জন্মভিটে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মারমা, বম, খুমি, খিয়াসহ আরো কয়েকটি জনগোষ্ঠীর সেনাবাহিনী সহযোগিতায় ১১ মাস পর নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন।

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সংগঠনের বান্দরবানের জেলা সাধারণ সম্পাদক উবামং মারমা বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সকল সংগঠন একত্রিত হয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপের ভূমিকা রাখতে হবে। পাহাড়ে  আঞ্চলিক ও জাতীয় রাজনৈতিক দলের নিয়ে সম্প্রীতি কমিটি' র গঠন করে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করলে পাহাড়ের শান্তি ফিরে আসবে।

শান্তির প্রতিষ্ঠা কমিটি আহ্বায়ক কাঞ্চন জয় তংচঙ্গ্যা বলেন, নির্বাচনে কারণে এখনো কেএনএফ সাথে এখনো বৈঠকে বসতে পারি নাই।  তবে আমরা চাই পাহাড়ের আগের মতন শান্তি  ও শৃঙ্খলা ফিরে আসুক। তাই যতদুর সম্ভব পাহাড়ের শান্তি ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছি।

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । সম্পাদক: 01703-137775 । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.