× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

এবার ক্লোন লাল বানর তৈরি করল চীন

হাসান রাজীব

১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:১১ পিএম । আপডেটঃ ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:১৩ পিএম

ক্লোন করা রেসাস বানরটির নাম দেয়া হয়েছে রেট্রো, ছবি : সংগৃহীত

চীনের বিজ্ঞানীরা এবার প্রথমবারের মতো লাল বানর বা রেসাস বানরের ক্লোন তৈরি করেছে। এই প্রজাতির বানরের মানুষের সঙ্গে জিনগত মিল সবচেয়ে বেশি এবং তাদের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপও মানুষের মতোই। আর তাই এই বানর ক্লোনের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা গবেষণায় ব্যাপক সম্ভাবনার দাবি করছেন গবেষকরা।

গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এবং মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের ১৬ জুলাই অর্থাৎ তিন বছর আগেই রেসাস বানরের ক্লোন তৈরি করেছে তারা। ক্লোন করে তৈরি বানরটির নামকরণ করা হয়েছে রেট্রো। গবেষকরা জানিয়েছেন বর্তমানে প্রাণীটি সুস্থ আছে।   

এর আগে চীন রেসাস বানর ক্লোন করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। তখন ক্লোন করা হলেও তা জন্মদান পর্যন্ত পৌঁছায়নি। প্রচেষ্টার কয়েক ঘণ্টা পরই ভ্রুণ মারা যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেট্রো হলো প্রাইমেটের দ্বিতীয় প্রজাতি যা বিজ্ঞানীরা সফলভাবে ক্লোন করতে সক্ষম হয়েছেন। এর আগে চীনা বিজ্ঞানীরা ২০১৮ সালে ক্লোনের মাধ্যমে জন্ম দেন বিশ্বের প্রথম বানরের। সেসময় ম্যাকক বানরের ক্লোন তৈরি করে চীনারা।

দেশটির বিজ্ঞানীরা বলছেন, রেসাস বানর ক্লোনের মাধ্যমে ওষুধের পরীক্ষা-নিরীক্ষা আরও গতিশীল হবে, কেননা জিনগত অভিন্ন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রাণী মেডিকেল পরীক্ষায় একই রকম ফলাফল দেয়, যা পরীক্ষণের নিশ্চয়তা বাড়ায়। এই ক্লোন হবে রোগ গবেষণায় মডেল।

চীনা গবেষকদের দাবি, রেসাস বানর ক্লোন সফল হওয়ায় বায়োমেডিকেল গবেষণাকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করতে পারে।

১৯৯৬ সালে ডলি নামের ক্লোন ভেড়ার জন্ম দিয়ে গোটা পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন স্কটল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে তখন তুমুল আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয় পুরো বিশ্বে।

তবে চীনের এই ক্লোনের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন প্রাণী কল্যাণগোষ্ঠী। তাদের দাবি, ক্লোনের এই উন্নয়নের জন্য তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কেননা, এর মধ্য দিয়ে এবার মানুষের ক্লোন করার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কেননা, লাল বানর জেনেটিক গঠনের দিক থেকে মানুষের খুব কাছের প্রাণী।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যালস (আরএসপিসিএ) এর মুখপাত্র বলেন, সংস্থাটি বিশ্বাস করে প্রাণীর দুর্ভোগ মানব রোগীদের জন্য যে কোনও তাৎক্ষণিক সুবিধার চেয়ে বেশি।

রেসাস বা লাল বানর মূলত এশিয়ার বন্য অঞ্চলে বিশেষ বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং চীন হয়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে পাওয়া যায়। এই প্রজাতির বানর মেডিকেল ল্যাবে সংক্রামক ব্যাধি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গবেষণায় বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়।

এর আগে ২০১৮ সালে চীনা বিজ্ঞানীরা বিশ্বের প্রথম ক্লোন বানরের জন্ম দিয়েছিল। ক্লোন করা বানর দুটির নাম দেওয়া হয়েছিল ঝং ঝং এবং হুয়া হুয়া। ক্লোন করা বানরশাবক দুটির মধ্যে ঝং ঝং-এর জন্ম ৮ সপ্তাহ আগে। আর হুয়া হুয়ার জন্ম ৬ সপ্তাহ আগে।

ওই সময় ক্লোন করা বানরশাবক দুটিকে বোতলের সাহায্যে দুধ খাওয়ানো হয়। অন্যসব সাধারণ বানরশাবকের মতোই এরা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে। তখন  চীনা গবেষকরা ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে এরকম আরো বানরশাবক জন্ম দেয়া হবে বলে জানিয়েছিল।

চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস-এর বিজ্ঞানী কিয়াং সানের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ক্যান্সার, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জিনগত ত্রুটির গবেষণা ও নিরাময়ের কাজে লম্বা লেজওয়ালা এই বিশেষ ধরনের ক্লোন বানরকে কাজে লাগানো হবে। বিজ্ঞানীদের কাছে এগুলো হবে এসব রোগ গবেষণায় মডেল।   

তবে প্রাণিবিজ্ঞানীদের অনেকেই ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে বানরশাবক জন্ম দেয়ার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের আশঙ্কা, এর মধ্য দিয়ে মানুষের ক্লোনিং করার ঝুঁকির কাছাকাছি চলে এসেছে পৃথিবী। কেননা বানর হচ্ছে জেনেটিক গঠনের দিক থেকে মানুষের খুব কাছাকাছি থাকা প্রাণি।

যারা এ ব্যাপারে নৈতিকতার প্রশ্নটি সামনে এনেছেন তাদের মধ্যে আছেন কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড্যারেন গ্রিফিন।

প্রসঙ্গত, স্কটল্যান্ডের এডিনবরার রোসলিন ইনস্টিটিউটের প্রাণিবিজ্ঞানীরা আজ থেকে ২০ বছর আগে ডলি নামের একটি মাদি ভেড়ার জন্ম দিয়েছিলেন ক্লোনিংয়ের মাধ্যমে। এটিই ছিল বিশ্বে স্তন্যপায়ী প্রাণির ক্লোনিংয়ের প্রথম নজির।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.